তোফাজ্জল হত্যায় জড়িতরা গ্রেফতার হয়েছে: ডিএমপি

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান, এ ঘটনায় আরও যারা জড়িত, তাদের গ্রেফতারেও তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ডিএমপির মিডিয়ার সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, সে ঘটনায় শুরু থেকেই পুলিশ তৎপর ছিল। মামলার পর আমাদের ঊর্ধ্বতনরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় ঢাবি প্রশাসন আমাদের কাছে ছয় শিক্ষার্থীকে সোপর্দ করেছে। আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঢাবি কর্তৃপক্ষ তাদের কিছু পর্যবেক্ষণ আমাদের জানিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। বাকি যারা জড়িত, তাদের গ্রেফতারে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে।’

গত বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ফজলুল হক মুসলিম হলের অতিথি কক্ষে ৩২ বছর বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল হোসেন নির্যাতনের শিকার হন। কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ছয় শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ঢাবি প্রশাসন।

ডিএমপি কর্মকর্তা তালেবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের তদন্ত চলছে। তদন্তে যদি আর কারও সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি।’

কাজে যোগ না দেওয়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

যেসব পুলিশ সদস্য কর্মস্থলে অনুপস্থিত তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে তালেবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কিছু আইন ও বিধির মধ্যে চলতে হয়। চাকরিতে কিছু নিয়মকানুন আছে। সেই নিয়মকানুন অনুযায়ী যদি কেউ বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে চাকরি বিধি মেনে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ঢাকার ২২টি থানা আংশিক বা পরিপূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। সব মিলিয়ে ২১৬টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি অল্প সময়ে সংস্কার করে আগের পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার। আমরা সীমিত রিসোর্সের মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি জনজীবনে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে।’

লুট হওয়া অস্ত্রের পূর্ণ তথ্য মেলেনি

ডিএমপির লুণ্ঠিত অস্ত্রের বিষয়ে এখনো ‘হিসাব-নিকাশ’ চলছে বলে জানান ডিএমপির এই উপকমিশনার। বলেন, ‘যেহেতু অনেকগুলো স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা এখনো পরিপূর্ণ তথ্য পাইনি। এটার কাজ চলছে। শেষ হলে আপনাদের পরিপূর্ণ তথ্য দিতে পারব।’

মোহাম্মদুপরে জোড়া খুন নিয়ে যা বললেন

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার বধ্যভূমিসংলগ্ন বেড়িবাঁধে নাসির বিশ্বাস (২৯) ও মুন্না (২২) নামে দুজনকে খুনের ঘটনায় মিরাজ মোল্লা নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই সুমন বিশ্বাসের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদপুর থানায় রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) একটি মামলা হয়েছে। মামলাটি তদন্তের সময় আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও প্রযুক্তির সহায়তায় রোববারই মিরাজ মোল্লাকে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

উপকমিশনার তালেবুর রহমান বলেন, ‘গ্রেফতার মিরাজ মোল্লা এলাকার এলেক্স ইমন গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপ মোহাম্মদপুর এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ে জড়িত। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মিরাজের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একটি আগের একটি মামলা রয়েছে।’

নাসির হত্যার সঠিক কারণ উদ্‌ঘাটন করতে ও অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

ডিএমপি ডিএমপির উপকমিশনার ঢাকা মহানগর পুলিশ তালেবুর রহমান তোফাজ্জল হত্যা