Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাঙ্গামাটির সড়কে-বাজারে সমাগম বাড়ছে, সকাল থেকে চলবে আন্তঃজেলা যান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৭

রাঙ্গামাটির কল্যাণপুরে সড়কের পাশে বসেছে বাজার। সোমবার সেখান থেকে সবজি কিনছিলেন স্থানীয় পাহাড়িরা। ছবি: সারাবাংলা

রাঙ্গামাটি: অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা পরিবহণ ধর্মঘট রাতে প্রত্যাহারের পর সকাল থেকেই রাঙ্গামাটি শহরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল শুরু হয়েছে। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কম হলেও সড়ক ও বাজারে জনসমাগমও বাড়তে শুরু করেছে।

এদিকে ৭২ ঘণ্টার জন্য ডাকা সড়ক ও নৌ পথ অবরোধ অব্যাহত থাকায় দূরপাল্লার যানবাহন ও কাপ্তাই হ্রদে নৌ যান চলাচল বন্ধ ছিল। জেলা থেকে ছেড়ে যায়নি দূরপাল্লার কোনো বাস। আন্তঃজেলা সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। তবে তিন দিনের অবরোধ শেষ হওয়ার পর নতুন কোনো কর্মসূচি না আসায় সকাল থেকেই চলবে আন্তঃজেলা যানবাহন।

বিজ্ঞাপন

রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম মোটর মালিক সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহণ সংস্থার রাঙ্গামাটি জোন চেয়ারম্যান মো. মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, মঙ্গলবার সকাল থেকে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রামসহ খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের সঙ্গে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস চলাচল করবে। সকাল থেকে কাপ্তাই হ্রদেও লঞ্চ চলাচল করবে।

পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সোমবার সকাল থেকে রাঙ্গামাটি শহরের একমাত্র অভ্যন্তরীণ যানবাহন সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলতে শুরু করেছে। ছবি: সারাবাংলা

গত শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় ‘বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার সমাবেশ’ থেকে তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার সড়ক ও নৌ পথ অবরোধের ডাক দেওয়া হয়। অবরোধ কর্মসূচিতে সমর্থন জানায় পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

শুক্রবার সকালেই রাঙ্গামাটি শহরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর দুপুরে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করতে বাধ্য হয় জেলা প্রশাসন। রাতে আবার যানবাহনে হামলা, ভাঙচুর ও শ্রমিকদের মারধরের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডাকে রাঙ্গামাটি পরিবহণ শ্রমিক ও মালিকদের সংগঠনগুলো।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসন, পরিবহণ খাত ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের মধ্যে আলোচনার পর রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ১৪৪ ধারা তুলে নেয় জেলা প্রশাসন। রাতে পরিবহণ ধর্মঘটও প্রত্যাহারের ঘোষণা আসে। ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচিও আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) শেষ হলো।

কল্যাণপুরে সড়কের পাশের বাজারে বেচাকেনার চিত্র। ছবি: সারাবাংলা

এদিকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে রাঙ্গামাটির শহরের পরিস্থিতি। অন্য সময়ের তুলনায় অনেকটা কম হলেও সোমবার সকাল থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্র বনরূপা বাজারে পাহাড়ি-বাঙালি ব্যবসায়ী ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা গেছে। বিকেলে কল্যাণপুরে সড়কের পাশে ও আসামবস্তিতেও পাহাড়িদের বাজারে বেচাকেনা করতে দেখা গেছে।

সোমবার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। শুক্রবারের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ধ্বংসস্তূপগুলো বেশির ভাগই সেভাবে আছে।

রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, রোববার রাতে পরিবহণ মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার রাত থেকেই ঢাকার উদ্দেশে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে বান্দরবান-খাগড়াছড়ির সঙ্গেও যাত্রীবাহী বাস চলবে। রাঙ্গামাটি শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। রাস্তাঘাট ও হাটবাজারে মানুষের সমাগম বেড়েছে।

রাঙ্গামাটির মৈত্রী বিহারে ভাঙচুর, লুটপাট ও সংঘটিত সহিংস ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ সংবাদ সম্মেলন করে সোমবার সকালে। ছবি: সারাবাংলা

এদিকে রাঙ্গামাটির মৈত্রী বিহারে ভাঙচুর, লুটপাট ও সংঘটিত সহিংস ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সংগঠন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ। সোমবার সকালে জেলা শহরের বনরূপা মৈত্রী বিহারে সংবাদ সম্মেলন করেন সংগঠনটির বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সভাপতি শ্রদ্ধালংকার মহাথের।

সংবাদ সম্মেলন অভিযোগ করা হয়, শুক্রবার সাম্প্রদায়িক সংহিসতার সময় একদল দুর্বৃত্ত সংঘবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে অতর্কিতভাবে গেট ভেঙে শহরের মৈত্রী বিহারে প্রবেশ করে পবিত্র বুদ্ধ মূর্তি ভাঙচুর করে, ত্রিপিটক গ্রন্থ ছিড়ে ফেলে ও আসবাবপত্রসহ বিহারের বিভিন্ন সম্পত্তি ব্যাপক ভাঙচুর করে। একই সময়ে বিহারের দুই দানবাক্স লুট করে নিয়ে যায়।

পূণ্যজ্যোতি মহাথের, শীলানন্দ মহাথের, নাইন্দাচারা মহাথের, শীলজ্যোতি মহাথের, মৈত্রী বিহারের সভাপতি পূর্নেন্দু বিকাশ চাকমাসহ অন্যরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/টিআর

অবরোধ ধর্মঘট রাঙ্গামাটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর