আবু সাঈদ হত্যা: বেরোবিতে নতুন তদন্ত কমিটি
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৩:৫১
রংপুর: সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় তিন সদস্যের নতুন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী নতুন এই তদন্ত কমিটি গঠনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে একই ঘটনায় বেরোবি কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করলেও সরকার পতনের পর ওই কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করেছিলেন।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানকে। সদস্যসচিব হিসেবে রয়েছেন বেরোবি প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান। সদস্য অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমির শরীফ।
মোহাম্মদ আলী বলেন, ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জড়িত ব্যক্তিদের (শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী) চিহ্নিতকরণ ও শাস্তির ধরন নির্ধারণের জন্য তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
গত ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দিয়ে পুলিশের সামনে বুক পেতে দাঁড়িয়েছিলেন আবু সাঈদ। এ সময় পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হন বহু মানুষ, এতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন, পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের।
এর আগে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহতের দুই দিন পর ১৮ জুলাই একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন ওই সময়কার বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মতিউর রহমানকে প্রধান করে গঠিত কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শফিকুর রহমান, সদস্য ছিলেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক বিজন মোহন চাকী।
আবু সাঈদ হত্যার এক মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও ওই কমিটি কোনো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। এর মধ্যে সরকারের পতনও ঘটে। পরে সমালোচনার মুখে গত ২০ আগস্ট কমিটির সব সদস্য পদত্যাগ করেন।
এদিকে আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় তার পরিবার ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় উপপরিদর্শক (এসআই) আমীর হোসেন ও কনেস্টবল সুজন চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পিবিআই মামলাটি তদন্ত করছে।
সারাবাংলা/টিআর