প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:২৫
ঢাকা: গত শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সারাবাংলা ডটনেটে ‘কখনো সাংবাদিক, কখনো সমন্বয়ক-প্রতারণাই তুতুর পেশা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ই-মেইলের মাধ্যমে একটি প্রতিবাদ আসে।
পরিচয় দেওয়া অনলাইন দৈনিক আনন্দবাজার এডিটর মিঞা মো. নুজহাতুল হাচানের পাঠানো প্রতিবাদলিপিটি সারাবাংলা ডটনেটে হুবহু তুলে ধরা হলো।
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
‘গত ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, শনিবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সারাবাংলা ডট নেট অনলাইনে নিউজ পোর্টালে কখনো সাংবাদিক, কখনো সমন্বয়ক-প্রতারণাই তুতুর পেশা’ শিরোনামে একটি ভিত্তিহীন, অসত্য, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিমূলক লেখা প্রকাশ হয়েছে। যা বাস্তবতার সাথে কোনো মিল নেই। বিগত ৪ বছর ধরে আওয়ামী সরকারের তথা এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম কতৃক চরমভাবে অত্যাচারিত ও নির্যাতিত। ব্যাক্তিগত বিরোধের জেরে মনিরুল আমাকে ডিবি দিয়ে তুলে নিয়ে ৫ দিন গুম করে রাখে, অমানুষিক নির্যাতন চালায়, মিথ্যা মামলা দেয়, আমার পাসপোর্ট আটকে রাখে। শেষ গত দুই বছর জীবন বাঁচাতে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে।
ফ্যাসিষ্টমুক্ত নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে আমি যখন মনিরুলের অত্যাচার নির্যাতনের বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলতে শুরু করছি তখন মনিরুল তার অনুগত ও পালিত সাংবাদিক সিন্ডকেট দিয়ে আমার বিরুদ্ধে গুজব ও মিথ্যা বানোয়াট নিউজ করিয়ে নিজেকে বাঁচাতে চাচ্ছে।
এমন মিথ্যা ও বানোয়াট লেখায় সমাজে, বিশেষ করে সাংবাদিক সমাজ নিয়ে জনমনে নিতিবাচক প্রভাব পরছে। এতে শুধু ব্যক্তি আমিই ক্ষতিগ্রস্তহ হইনি, সাংবাদিক সমাজকে কুলুষিত করা হয়েছে। এমতা অবস্থায় প্রকাশিত তথ্যে সংশোধন করে সত্য তথ্য প্রকাশ করা জরুরি বলে মনে করি।
প্রকাশিত লেখার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ও আমার অবস্থান
ক. সারাবাংলা ডট নেট-এ প্রকাশিত লেখায় বলা হয়েছে ,তারা আমার মোবাইল নম্বরে কল করা হলে, সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কল কেটে দেন তিনি। যা পুরোপুরি অসত্য। আমার মোবাইল নম্বরে সারাবাংলা থেকে কোন ফোন আসেনি।
খ. প্রকাশিত লেখায় বলা হয়েছিল, আমার বড় ভাইয়ের নাম রফিকুল ইসলাম। এই নামে আমার কোনো ভাই নেই। যদিও পরবর্তীতে নাম পরিবর্তন করে আমার বড় ভাইয়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে নুজহাদ বাপ্পি। সত্য বিষয়টি হলো এ নামেও আমার কোনো ভাই নেই। মূলত আমারা সাত ভাই। আমার কোনো ভাই সারা বাংলার সঙ্গে কথা বলেননি। ভাইয়ের নামে যা বলা হয়েছে, তার পুরোটাই মনগড়া কথা।
গ. প্রকাশিত লেখায় বলা হয়েছে, আমার আদালতে দুই বছরের সাজা হয়। এ কথাটিও পুরোপুরি অসত্য ও ভিত্তিহীন। আমি কখনোই আদালতে সাজাপ্রাপ্ত হইনি।
ঘ. প্রকাশিত লেখায় আমার স্ত্রী সম্পর্কে বলা হয়েছে, এমনকি তার স্ত্রী ও এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত। এ অভিযোগটিও পুরোপুরি অসত্য, মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার স্ত্রীর নামে কখনো, কোথাও এ ধরণের অভিযোগ ওঠেনি, কেউ দেননি। শুধুমাত্র হেয় প্রতিপন্ন করতে এরকম মিথ্যা বানোয়াট কথা বলা হয়েছে।
ঙ. প্রকাশিত লেখায় আমার পড়াশোনা নিয়ে বলা হয়েছে, তার সব সার্টিফিকেট জাল। কিসের ভিত্তিতে বলা হয়েছে আমার সাটিফিকেট জাল? এটা সম্পূর্ণ অসত্য। আমি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুরের বাটিকামারি হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ফরিদপুর সরকারি ইয়াসিন কলেজ থেকে এইচএসসি, স্টেট ইউনিভাসিটি অব বাংলাদেশ থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পূর্ণ করেছি। সর্বশেষ আমি রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশীপ ইউনিভাসিটিতে গ্লোবাল এন্ড ডিজিটাল মিডিয়া বিষয়ে স্নাতকোত্তররে অধ্যায়নরত আছি, বর্তমানে একাডেমিক লিভে আছি।
চ. প্রকাশিত লেখায় আমাকে বলা হয়েছে, তিনি মূলত সাংবাদিক নন। বাস্তবতা হলো, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র আমি। ২০১৫ সালের জুনে দৈনিক ইত্তেফাক দিয়ে শুরু হয় সাংবাদিকতা। এরপর স্টুডেন্ট জার্নালের সম্পাদক ও টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ এ কাজ করেছি। বর্তমানে বাংলাদেশের দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার, এডিটর অনলাইন হিসেবে কর্মরত আছি।
ছ. প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে- এখন তিনি ভুয়া সমন্বয়ক সেজে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের কথা বলা হয়েছে। বাস্তবতা হলো আমি কখনো, কোথাও নিজেকে সমন্বয়ক পরিচয় দেইনি, দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি সাংবাদিকতা কিরি। এটাই আমার একমাত্র পরিচয়। এটা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও প্রোপাগান্ডা।
নোট: মূলত প্রকাশিত এই লেখার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি ভিত্তিহীন, অসত্য ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়ে সাজানো। আমি মনে করি, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাকে হেয় করার জন্য, আমার চরিত্র হননের জন্য, আমার সুনাম নষ্ট করার জন্য, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এটি সারাবাংলায় মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
সঠিক তথ্য হলো- ২০২১ সালে এসবি প্রধান মনিরুল ইসলামের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিরোধ তৈরি হয়। তিনি আমার ঢাকার বাসা থেকে ডিবি দিয়ে তুলে নিয়ে যান। ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আমাকে অমানবিক নির্যাতন করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমার নামে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দেন। পরবর্তীতে আমি কোর্টে জামিনে বাহিরে আসলে বিভিন্নভাবে আমাকে হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি দিতে থাকেন মনিরুল ইসলাম। চরম নিরাপত্তাহীনতার কারনে একপর্যায়ে আমি নিজেকে রক্ষায় আমার স্ত্রীকে নিয়ে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হই। গত ২ বছর টানা আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে। তখন আর্ন্তাতিক মানবাধিকার সংস্থা, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, রবার্ট কেনেডি ফাউন্ডেশন, সিপিজে, ইউএসের স্টেস ডিপার্টমেন্ট, ইউএস এম্বাসি বাংলাদেশ, জাতীয় মানবাধীকার কমিশনকে মনিরুল কতৃক আমাকে নির্যাতনের বিষয় আমি তাদের লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম তারা অবগত ছিলেন। চরম নিরাপত্তাহীনতায় দেশ থেকে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলেও এয়ারপোর্টে মনিরুল আমাকে এসবি দিয়ে আটকে আমার পাসপোর্ট রেখে দেয়। এসব বিষয়ে আমি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনে অভিযোগ করি। ৫ আগস্টের পর আমি এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে থাকি। ইতোমধ্যে দেশের একাধিক মেইনস্টিম মিডিয়াতে আমি এ বিষয়ে কথা বলেছি। আমি প্রতিকার চেয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে শুরু করলে মনিরুল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও গুজব ছড়িয়ে নিজেকে বাচাতে চাইছেন। এমনকি গত ১৮ সেপ্টেম্বর দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় আমার বক্তব্য প্রকাশ হওয়ার পরেই আমাকে হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানোর জন্য মনিরুল তার বিভিন্ন লোকজন দিয়ে থানায় আমার নামে মিথ্যা জিডি করায়।
পরিশেষে সবিনয়ে আমি বলতে চাই সারাবাংলায় আমার নামে প্রকাশিত মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত লেখাটি সড়িয়ে সত্য ঘটনাটি তুলে ধরে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামি সরকারের দোসর মনিরুল কতৃক নির্যাতিত একজন মজলুম সাংবাদিকের পাশে দাড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি। সারাবাংলা অনলানের সুনাম ও বস্তুনিষ্ঠতা বজায় রাখতে এধরনে অসত্য, ভূয়া ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত সংবাদ পরিহারের অনুরোধ জানাই।“
প্রতিবেদকের বক্তব্য
সবকিছু নিয়ম মেনে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত ডকুমেন্টস প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম