মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন সাংবাদিক আতাউস সামাদ
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:০৪
ঢাকা: বরেণ্য সাংবাদিক আতাউস সামাদ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সাংবাদিকতার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। শুধু তাই নয় দেশে যখন স্বৈরাচারের আর্বিভাব ঘটেছে তখন তার বিরুদ্ধে কলম দিয়ে লড়েছেন। গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অক্লান্ত যোদ্ধা ছিলেন আতাউস সামাদ। তিনি একজন আপাদমস্তক আদর্শিক মানুষ।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আতাউস সামাদের ১২ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আতাউস সামাদ স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
স্মরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন রয়র্টার্সের আলোকচিত্রি সাংবাদিক রফিকুর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন করেন শওকত মাহমুদ, ছড়াকার আবু সালেহ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হোসেন, প্রায়ত আতাউস সামাদের ভাতিজা ইশতিয়াক আজিজ উলফা, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি সাংবাদিক এম আব্দুল্লাহ,আমার দেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বি এফ ইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাছির জামাল, সাংবাদিক ইউনিয়নে সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মহসিন, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সম্পাদক ড. সাদিকুল ইসলাম স্বপন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহামুদ বলেন, আতাউস সামাদের অন্তর্বোধে একটা আগুন ছিল। হতাশা তো বটেই। তার ‘একালের বয়ান’ বইয়ে কষ্টের উল্লেখটা পরিষ্কার পাওয়া যায়-‘জীবনের এতোটা পথ হাঁটলাম, কিন্তু আলোর দেখা পেলাম না। কবে দেখব দেশকে উদ্ভাসিত আলোয়? সময় তো নিষ্ঠুর, কাউকে রেয়াত করে না’। কেন লেখেন এমন প্রশ্নে বাংলাভাষার কালজয়ী ঔপন্যাসিক মহাশ্বেতা দেবী বলেছিলেন, স্বাধীনতার একত্রিশ বছরেও আমি অন্ন, জল, জমি, ঋণ বেঠবেগারী কোনটি থেকে মানুষকে মুক্তি পেতে দেখলাম না। তার বিরুদ্ধে নিরঞ্জন, শুভ্র ও সূর্য- সমান ক্রোধই আমার সকল লেখার প্রেরণা।
তিনি আরও বলেন, আতাউস সামাদ ছিলেন, একজন পাবলিক ইন্টেলেকচুয়াল। দেশ ও মানুষ অন্তপ্রাণ। মানুষের অধিকার আর রাষ্ট্রের মুক্তির জন্য লেখালেখি এবং কিছু একটা করার তাগিদ সর্বদাই তার মনস্তত্বে ছিল। মৌলক ও মানবাধিকারের জন্য মিডিয়া ও রাজপথে সমান সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯৪-৯৫ তে রাজনৈতিক সংকটকালে মধ্যস্থতার জন্য পাঁচ বুদ্ধিজীবি কমিটির সদস্য ছিলেন।
১৯৭০ এ ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশের শ্লোগান দেয়া, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং যখনই সরকার স্বৈরাচার হয়েছে সাংবাদিকতা এবং দায়িত্ববোধ নিয়ে রুখে দাড়ানোর ঘটনাবলীতে তিনি অবিস্মরণীয়। শেখ হাসিনার কুশাসনকালে তাকে পড়তে হয়েছে রোষানলে, এরশাদের আমলে জেল খেটেছেন। তিনি ও বিবিসি একাত্মা হয়ে গিয়েছিল। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দিল্লি থেকে শেখ মুজিবের দেশে ফেরার ফ্লাইটে তিনি একমাত্র সাংবাদিক সহযাত্রী ছিলেন।বাংলাদেশের সকল শাসকই এই ‘গোলমেলে’ লোকটাকে সমীহ করতেন ধড়-ফড় বুকে।
প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, দেশ সব সময় স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়। সংবাদপত্র এবং টেলিভিশন ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয় না। আমার প্রশ্ন দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে? পত্রিকার পাতায় এবং টেলিভিশনে তাই দেখতে পেতাম।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনইউ