পাহাড়ের পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উদ্বেগ
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:১৫
ঢাকা: পার্বত্য জেলার উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। পাহাড়ের পরিস্থিতিকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই অভিহিত করে দলের স্থায়ী কমিটি পার্বত্য জেলার সংশ্লিষ্ট নেতাসহ সব অংশীজনদের নিয়ে জাতীয় কনভেনশন আয়োজনেরও আহ্বান জানানো হয়েছে সভা থেকে।
দলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সভায় পার্বত্য জেলাগুলোতে উদ্ভূত সংঘাতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের অংশ হিসেবে এই ধরনের সংঘাত তৈরি করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণরূপে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এ ঘটনা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ। এ ঘটনাগুলো হালকা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।’
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের তিন দিন পর বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি বৈঠকের বিভিন্ন আলোচনার তথ্য তুলে ধরেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যরিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
মির্জা ফখরুল ইসলামের সই করা বিবৃতে বলা হয়, সভা মনে করে— পার্বত্য জেলাগুলোতে শান্তি স্থাপনের জন্য দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল, পার্বত্য জেলায় সংশ্লিষ্ট নেতা ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের একটি জাতীয় কনভেনশন আহ্বান করা জরুরি। সভায় এ লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতে আরও বলা হয়, পতিত ফ্যাসিবাদ ক্ষমতায় ফিরে আসার জন্য পরিকল্পিতভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজারে হামলা, ভাঙচুর ও ‘মবলিঞ্চিং’য়ের মতো ঘটনা ঘটিয়ে শিল্পাঞ্চল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করছে। দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। সভা মনে করে, এ বিষয়ে সরকারি উদ্যোগে সব গণমাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করা এবং সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলের চার প্রচারণা বাড়ানো প্রয়োজন। সভা এ সব সমাজবিরোধী ও ঐক্যবিনাশী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায়। অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি।
বিবৃতিতে বলা হয়, সভায় সম্প্রতি ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের উলটো করে ঝুলিয়ে সোজা করা হবে’ বলে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানানো হয় এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য অন্তরায় হিসাবে কাজ করার বিষয়ে ভারতীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও নেতাদের এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। এরই মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের মন্তব্যে কঠোর সমালোচনা ও বিরত থাকার আহ্বান জানানোয় সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
এ ছাড়া সভায় হাসিনা সরকারের আমলে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদ বাতিল করার আহ্বান জানানো হয়। সভা মনে করে, প্রহসনের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করে পতিত সরকারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ বহাল রেখে অবাধ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর