সবজি-মুরগির বাজার চড়া, অধরা ইলিশ
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:১০
ঢাকা: বাজারে আলু ও ডিমের দাম স্থির থাকলেও বেড়েছে সবজির দাম। কোনো কোনো সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর খুচরা বাজারে দাম না কমলেও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমতির দিকে রয়েছে।
এদিকে সরকার নির্ধারিত দামে তো নয়ই, বরং আরও ১০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে পোলট্রি মুরগি। বর্তমানে প্রায় সব বাজারেই পোলট্রি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজিতে। রফতানির খবরে শুনে বাজারে ইলিশের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, তেজগাঁওয়ের বিজয় সরণির কলমিলতা ও মিরপুরের ইব্রাহিমপুর বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানীর ইব্রাহিমপুর বাজারে পেঁপে ৩০, করলা ৮০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা ও বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এই বাজারে আলু বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা ও পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া শশা মানভেদে ৭০ থেকে ১৪০ টাকা, গাজর ১৮০ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা ও কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এই বাজারের সবজি বিক্রেতা শাহাদাত বলেন, বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। কোনো কোনো সবজির দাম আগের তুলনায় কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
একই বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগি ২৬০ টাকা ও দেশি মুরগির কেজি ৫০০ টাকা।
মুরগি বিক্রেতা রাশেদ সারাবাংলাকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ব্রয়লারের দাম ছিল ১৯০ টাকা কেজি। তারপর ১৮৫ টাকা হয়েছিল। আজকে আবার ১৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আজকে মুরগি কিনতেই হয়েছে ১৭৫ টাকা কেজি দরে। প্রতি কেজিতে খরচ আছে ২ টাকা। সরকার নির্ধারিত ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করলে কেজিতে ৩ টাকা লাভ হবে। এই লাভ করলে ব্যাবসা লাটে উঠবে।
রাজধানীর বিজয় সরণি বাজারে শসা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ১৫০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, আলু ৫৫ টাকা ও পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এই বাজারের সবজি ব্যবসায়ী সবুজ সারাবাংলাকে বলেন, গত এক সপ্তাহে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে সবজির দাম।
একই বাজারে গরুর মাংস ৭২০ থেকে ৭৩০ টাকা কেজি ও খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারটিতে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজিতে।
মুরগি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর বলেন, সরকার ১৮০ টাকা কেজি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু আমাদের কিনতেই হয়েছে এই দামে। ফলে সরকারের নির্ধারণ করে দেওয়া দামে পোলট্রি মুরগি বিক্রির সুযোগ নেই।
রাজধানীর শেওড়াপাড়ার একটি মনিহারি দোকানে আলু ৬০ টাকা, পেঁয়াজ ১২০ টাকা, আদা ৩০০ টাকা ও রসুন ২৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেল। এই দোকানে ডিম ৫৫ টাকা হালি তথা ১৬৫ টাকা ডজন দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মসুরের ডাল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি ও সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা লিটার দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
দোকানটিতে চালের মধ্যে মিনিকেট ৭৮ টাকা, পাইজাম ৬৫ টাকা ও আটাশ ৬২ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। হৃদয় জেনারেল স্টোর নামের ওই দোকানের কর্মচারী রবিউল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, বাজারে চালের দাম স্থির রয়েছে। দাম বাড়েনি, কমেওনি। পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দামও স্থির। এসব পণ্যের দাম গত ১৫ দিন ধরে প্রায় একই।
এদিকে কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬০০ টাকা,
৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা ও এক কেজি আকারের ইলিশ ১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ইব্রাহিমপুর বাজারের ইলিশ বিক্রেতা মামুন বলেন, কেজিতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেড়েছে। এবার ইলিশের সরবরাহ কম। দাম আগে থেকেই বাড়তি। রফতানির খবরে সরবরাহ আরও কমে গেছে।
এদিকে কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া চায়না আদা ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২১০ থেকে ২২০ টাকা, কেরেলা আদা ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা ও নাটোরের রসুন ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এই বাজারে পাইকারিতে আলু ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর