বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১
ঢাকা: সম্প্রতি জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২৭টি কোম্পানির পরিচালকদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তাদের ব্যাক্তিগত অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার দাবি জানিয়েছেন বিনিযোগহকারীরা। একইসঙ্গে পুঁজিবাজারে ধারাবাহিত দরপতন এবং অযোগ্যতার দায়ভার নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগও দাবি করেন।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্টনে সিএমজেএফ অডিটরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পুজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদের ব্যানারে এ দাবি জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি আতাউল্লাহ নাঈম বলেন, পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সকল প্রতিষ্ঠানে ঘাপটি মেরে থাকা বিগত সরকারের সুবিধাভোগীরা ছাত্র-জনতার সরকারকে বেকাদায় ফেলতে এবং পুঁজিবাজারে অস্থিরতার সৃষ্টি করে স্বার্থ হাসিলে বিগত বিএসইসির জেড ক্যাটাগরি সংক্রান্ত উদ্যোগ বর্তমান সময়ে বাস্তবায়নে কারা অসৎ উদ্দেশ্য আছে কিনা তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজার সংক্রান্ত বিষয়ে সকল স্টেকহোল্ডারদের সুচিন্তিত মতামত গ্রহণ করে পারস্পরিক অনাস্থা দূর করে বিনিয়োগকারীদেরকে আস্থায় নেওয়ার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অন্যাথায় ধারাবাহিক মার্কেট পতন ও অযোগ্যতার দায়ভার নিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যানকে নিজ দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গত ১৫ বছর কারসাজির কারণে সৃষ্ট পতনে সর্বস্ব হারিয়ে যে সব বিনিয়োগকারী আত্মহত্যা ও হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন, সে সব বিনিয়োগকারীদের পরিবার থেকে একজনকে চাকরির সু-ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি । ২০১০ সালের ধসের পর থেকে আজ অবদি পুঁজিহারা বিনিয়োগকারীদের ৫০ শতাংশ পুঁজির যোগান দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, চিহ্নিত কারসাজিকারীদের কারণে ২০১০ সালের মহাধসের পর থেকে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি রক্ষার আন্দোলন করতে গিয়ে বিগত সরকারের হামলা-মামলার রোষানলে পড়ে নিরীহ বিনিয়োগকারীরা। চরম আর্থিক সংকট, পারিবারিক ও সামাজিক বৈষম্যের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়েছে। যার খবর কেউ রাখেনি। সুতরাং সকল হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা নিঃশর্ত প্রত্যাহার করতে হবে। মিথ্যা মামলা চালাতে গিয়ে যত টাকা খরচ হয়েছে তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্ত কোম্পানিগুলোতে স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বিনিয়োগকারীদের সঠিক তথ্য না দেওয়া, প্রকৃত লভ্যাংশ থেকে বিনিয়োগকারীদের বঞ্চিত করা, কোম্পানীর বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে কথা বলার সুযোগ না দেওয়া এবং দুর্নীতি ও অপকর্মের মাধ্যমে এজিএম সম্পন্ন করে কোম্পানির এজেন্ডা পাশ করানোর মধ্য দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোতে গিয়ে বিভিন্ন সংস্থার নামে চাঁদা আদায়ও এজিএম কে ঘিরে চলমান অনিয়ম দুর্নীতি অনুসন্ধান করে প্রকৃত দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অবিলম্বে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, পুঁজিবাজারের বর্তমান সংকটকালে ব্যাংকগুলোকে সংকট উত্তরণে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ রাইট শেয়ার ছেড়ে সুবিধামতো সময়ে ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজার থেকে হাজার-হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। তাই পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ নিশ্চিত করার কার্যকর ভূমিকা ও উদ্যোগগ্রহণ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কে পলিসি সাপোর্ট দিতে হবে।
সারাবাংলা/জিএস/ইআ