Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গো-খাদ্যের চাহিদা পূরণে নেপিয়ার ঘাস, চাষে সফলতা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:২৩

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জে দিন দিন বেড়ে চলেছে নেপিয়ার ঘাসের চাষাবাদ। উন্নত জাতের এ ঘাস গবাদিপশুর খাদ্য চাহিদা মেটাচ্ছে। গ্রামেগঞ্জে খড়ের বিকল্প গরু-ছাগলসহ অন্যান্য গবাদিপশুকে খাদ্য হিসেবে দেওয়া হচ্ছে নেপিয়ার ঘাস। খড়ের দামের তুলনায় নেপিয়ার ঘাস সাশ্রয়ী হওয়ায় পশু পালনকারীরাও ঝুঁকছেন এই ঘাস চাষে। আবার অনেকেই চাষাবাদ করে হচ্ছেন আত্মনির্ভশীল।

জেলার হোসেনপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপকহারে বিদেশি নেপিায়ার ঘাসের চাষাবাদ হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষি জমি, পতিত জমি এবং বাড়ির আশপাশে নেপিয়ার ঘাসের ছড়াছড়ি। খড়ের চেয়ে এখন এই ঘাসের চাহিদা অনেক বেশি। এ কারণে কৃষক ও খামারিরা নেপিয়ার ঘাস চাষে উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন। বিশেষত খড়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিদেশি জাতের নেপিয়ার ঘাস।

বিজ্ঞাপন

নেপিয়ার ঘাসের চাষাবাদে তেমন পরিশ্রম করতে হয় না। খুব বেশি ব্যয় না হওয়ায় কৃষকেরা অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে লাভবান হচ্ছেন। এ জাতের ঘাস রোপণের এক থেকে দুই মাসের মাথায় কাটার উপযোগী হয়ে যায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে একই গোছা (গোড়া) থেকে চারা গজায়। সে ক্ষেত্রে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে কাটার উপযোগী হয়। একটি গোছা থেকে ১২ থেকে ১৫ কেজি ঘাস হয়। একবার বীজ রোপণ করলে কয়েক বছর অনবরত ঘাস পাওয়া যায়। ফলে খরচ কম হয়।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ কৃষক ও খামারি নেপিয়ার ঘাসচাষ করছেন। তাদের কেউ গবাদিপশুর খাদ্য চাহিদা পূরণে ঘাস রোপণ করছেন। আবার কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হতে নেপিয়ার ঘাসচাষে উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন।

সেখানকার কৃষকরা জানান, খড়ের দাম বেশি হওয়ায় এখন এই ঘাস খাওয়ানো হচ্ছে। নেপিয়ার ঘাস চাষে অল্প খরচে বেশি লাভ হয়। একারণে কৃষকেরা এখন এই ঘাস চাষ করছেন। এ ঘাস চাষের জন্য বীজ বোনা এবং চারা লাগানো যায়। বীজ বুনলে দেড় মাস এবং চারা লাগালে এক মাসের মধ্যে ঘাস বড় হয়ে যায়। প্রতিমাসে অল্প ফসফেট, পটাশ এবং ইউরিয়া সার দিতে হয়। মাঝেমধ্যে একটু সেচও দিতে হয়।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া, এই ঘাসচাষ করে গরু-ছাগলকে খাওয়ানোর পাশাপাশি জমি থেকে ঘাস বিক্রিও হচ্ছে। ঘাসের টাকায় সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। এখন ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ, জমির সার-কীটনাশক কেনার জন্য আগের মতো কষ্ট করতে হয় না। গ্রামের অনেকেই ঘাসচাষ করে লাভবান হয়েছেন। এই ঘাস চাষে বেকারত্বও ঘুচেছে বলে জানান ঘাস চাষিরা।

হোসেনপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. উজ্জল হোসাইন জানান, বর্তমানে এখানে ১২২. ৭ একর জমিতে নেপিয়ার চাষ হচ্ছে। নেপিয়ার ঘাসের চাহিদা অনেক বেশি। নেপিয়ার ঘাস একটি বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। একবার লাগালে কয়েক বছর ধরে ঘাস পাওয়া যায়। অন্য ফসলের মতো নেপিয়ার ঘাসের পরিচর্যা করা লাগে না। সময়মতো সেচ আর সামান্য সার দিলেই ভালো ফলন হয়।

তিনি আরও জানান, অনেক কৃষক এবং খামারি এখন নেপিয়ার ঘাস চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। নেপিয়ার জাতের ঘাস গরুর খাবারের ছয়টি উপাদানের সুষম চাহিদা পূরণ করে। দুধ ও বেশি দেয়। এ ঘাস পশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ও মাংস বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে।

সারাবাংলা/ইআ

কিশোরগঞ্জ ঘাস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর