Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তিস্তার বিভিন্ন পয়েন্টে কমছে পানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১ অক্টোবর ২০২৪ ১১:০২

রংপুর: উত্তরের জীবনরেখা তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে লালমনিরহাটের দোয়ানীতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্ট এবং রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া বাড়িঘর থেকেও নামতে শুরু করেছে পানি। তবে এখনও ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। এদিকে ঘুরে দাঁড়ানোর যুদ্ধে সম্মুখীন হতে শুরু করেছে পাড়ের বাসিন্দারা।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)।

বিজ্ঞাপন

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত কয়েকদিন থেকে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল আর টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তরের প্রধান নদী তিস্তায় অস্বাভাবিকহারে পানি বাড়ায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। শুরু হয় তীব্র ভাঙ্গন; যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। পানির চাপ সামলাতে তিস্তার ব্যারেজের ৪৪ ফটকও খোলা রাখা হয়। তিস্তা নদীর পানি রোববার বিপদসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আর তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে ৫২ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটারে পানি প্রবাহিত হয়।

ডালিয়া পাউবোর উপ-প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন জানান, উজানের ঢল আর বর্ষণে তিস্তায় পানির প্রবাহ বেড়েছিল। তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করলেও বর্তমানে কমতে শুরু করেছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢল আর টানা কয়েকদিনের বৃষ্টির পানিতে ফুলে-ফেঁপে উঠে উত্তরের নদ-নদীগুলো। বিশেষ করে তিস্তা, ঘাঘট, যমুনেশ্বরী, করতোয়া, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রসহ অসংখ্য নদ-নদী বিধৌত রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও তিস্তার পানি বিপদসীমা উপচে নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল ঢুকে পড়েছে। স্বল্প মেয়াদি বন্যার সঙ্গে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙনের আশঙ্কা। আকস্মিক বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে উঠতি আমন ধান ও শীতকালীন শাক-সবজির ক্ষেতসহ ডুবেছে বিভিন্ন ফসলি জমি। প্রভাব পড়েছে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি রেলপথেও।

বিজ্ঞাপন

তিস্তার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে কমছে পানি কমলেও ভাঙ্গন মোকাবিলা আর ঘুরে দাঁড়ানোর যুদ্ধ এখন পাড়ের বাসিন্দারের। তাদের অভিযোগ, চলতি বছরেই বাসিন্দারা পাঁচবার তিস্তার ভাঙ্গনের মুখোমুখি হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সরকারের কোনো সহযোগিতা পাননি। তাদের কাছে এখনও কোনও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি। গতকাল বিকাল থেকে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন তারা কিন্তু কেউ খোঁজ নেননি।

তিস্তাপাড়ের উপজেলা কাউনিয়ার গদাই গ্রামের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, অসময়ে হটাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। অনেক বাড়িঘর ভেঙে গেছে। রাস্তাঘাট চলাফেরার অনুপযোগী হয়ে গেছে। আগাম আমন ধান ও আগাম আলুসহ অন্যান্য ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে। এবারের বন্যায় কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে গেছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, পানিবন্দি মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৭ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে।

পাউবোর রংপুর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নদীর পানির সমতল আরও হ্রাস পেয়ে পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে। বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/ইআ

তিস্তা নদী তিস্তার পানি রংপুর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর