বিমানবন্দরের ৩ কিমি হর্নমুক্ত, কর্মসূচি উদ্বোধন
১ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫৪
ঢাকা: রাজধানী ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও এর আশপাশের ৩ কিলোমিটারকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করেছিল সরকার। আনুষ্ঠানিকভাবে সেই কর্মসূচির উদ্বোধন করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে রাজধানী ঢাকাসহ পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় শহরগুলোকেও ‘নিরব এলাকা’ বা হর্নমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, হর্ন বাজানোর দীর্ঘদিনের অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য প্রথমে মানুষকে সচেতন করা হবে। এরপর আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হবে। প্রথমে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে, পরে পুরো ঢাকা শহর এবং ধীরে ধীরে বিভাগীয় শহরগুলোতেও শব্দদূষণ বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ঢাকার কুর্মিটোলায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) প্রধান কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকাকে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করে এ দিন থেকেই যানবাহনে হর্ন বাজানো বন্ধ করার কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
লাইসেন্স নবায়নের শর্ত হিসেবে হর্ন বাজানোতে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আমার গাড়িতে হর্ন বাজানো হয় না। আশা করি, সবাই চালকদের হর্ন না বাজাতে উৎসাহিত করবেন। লাইসেন্স নবায়নের শর্ত হিসেবে হর্ন বাজানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। প্রথমবার আইন ভাঙলে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হবে। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ভুলগুলো বিশ্লেষণ করে ডিসেম্বর থেকে জরিমানা কার্যকর করা হবে।
উপদেষ্টা রিজওয়ানা বলেন, শব্দদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। এটি হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্নায়ুরোগ তৈরি করতে পারে। ঢাকায় যানবাহনের হর্নের কারণে মানুষের শ্রবণশক্তি কমছে। তাই ‘নীরব এলাকা’ কর্মসূচি শব্দদূষণ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এই উদ্যোগ সফল করতে যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানান উপদেষ্টা। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এ ধরনের কর্মসূচি দেশের অন্য এলাকাতেও বাস্তবায়ন করা হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসরীন জাহান; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কুমার বিশ্বাস; পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ; বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে পরিবেশ উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিমানবন্দর এলাকাকে হর্নমুক্ত হিসেবে বাস্তবায়নের এ উদ্যোগে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, বিআরটিএ, পরিবেশ অধিদফতর, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন।
এ ছাড়াও বেসরকারি সংস্থা গ্রিন ভয়েস ও ক্যাপসসহ শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছেন।
সারাবাংলা/টিআর