ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ইরান বলছে নাসরাল্লাহ হত্যার প্রতিশোধ
২ অক্টোবর ২০২৪ ০১:১৩
ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে শুরু করেছে ইরান। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরান কমপক্ষে ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এর বেশির ভাগই মার্কিন বিমান বাহিনীর সঙ্গে মিলে ইসারয়েলি বিমান বাহিনী ঠেকিয়ে দিয়েছে বলে আইডিএফ দাবি করেছে। তবে ইরান বলছে, তাদের ছুড়ে দেওয়া ক্ষেপণাস্ত্রের বেশির ভাগিই ইসরায়েলে আঘাত করেছে।
এদিকে গত সপ্তাহে ইসরায়েলি হামলায় ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহর নিহত হওয়া ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে এই হামলা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইরান। হামাস এই হামলাকে স্বাগত জানিয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এই হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের পাশে রয়েছে তার দেশ।
বিবিসি, আল জাজিরা ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে আইডিএফ এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বিবৃতিতে বলেছে, ইরান থেকে কিছুক্ষণ আগেই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে ইসরায়েলে। ইসরায়েল জুড়ে সাইরেন বেজেছে। ইসরায়েলিরাও নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটেছে।
ইরানের রেভুল্যুশনারি গার্ড বলেছে, ইসরায়েলের দিকে এক ঝাঁক ক্ষেপণাত্র ছুড়েছে ইরান। ইসরায়েল যদি এই হামলার পালটা জবাব দেয়, তাহলে তেহরানের জবাব আরও ‘মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক’ হবে।
ইরানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলে এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার নির্দেশ দিয়েছেন খোদ দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি নিরাপদেই আছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
অন্যদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের সক্ষমতার সামান্য অংশমাত্র। ফলে নেতানিয়াহুর জন্য ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া কোনোভাবেই উচিত হবে না।
অন্যদিকে সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, এসব হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সুরক্ষা দিতে এবং এ অঞ্চলে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের নিরাপদ রাখতে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করতে পারে, সে বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস ও হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা দলের সঙ্গে দিনের শুরুতে এক বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মঙ্গলবারের হামলা নিয়ে ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর (আইআরজিসি) এক বিবৃতিতে বলেছে, (ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায়) ইসমাইল হানিয়ে, হাসান নাসরাল্লাহ ও (আইআরজিসির কমান্ডার) আব্বাস নিলফোরোওশানের মৃত্যুবরণ করায় আমরা (ইসরায়েল) অধিকৃত ভূখণ্ডের কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছি। একইসঙ্গে এ হামলাকে লেবানন ও ফিলিস্তিনের জনগণকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবেও অভিহিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) স্থানীয় সেনা কমান্ডের নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলে। আইডিএফের বার্তায় বলা হয়েছে, সাইরেন শুনলে অবশ্যই আপনাকে সুরক্ষিত এলাকায় যেতে হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হবে।
এর আগে গত শনিবার নাসরাল্লাহর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে হিজবুল্লাহ। অন্যদিকে জুলাইয়ে ইরানে বোমা হামলায় নিহত হন হানিয়ে। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েল প্রকাশ্যে দায় স্বীকার না করলেও হামাস ও ইরান সবসময় তেল আবিবকেই দায়ী করেছে।
সারাবাংলা/টিআর
ইরান ইরানের হামলা ইসরায়েল ইসরায়েলে হামলা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হামাস হিজবুল্লাহ