শুরু হলো নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ
৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৪৬
ঢাকা: শুরু হয়েছে নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৪। টানা ১১তম বারের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস), বেসিস স্টুডেন্টস ফোরামের সহযোগিতায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশে (এআইইউবি) এই প্রতিযোগিতার এবারের পর্বের আয়োজন শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) শুরু হওয়া এই হ্যাকাথন একটানা ৩৬ ঘণ্টা চলবে। শনিবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় হবে সমাপনী অনুষ্ঠান। বিগত ১০ বছরে বিশ্বব্যাপী এই প্রতিযোগিতায় টানা তিনবারসহ মোট চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
নাসা অ্যাপ চ্যালেঞ্জের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, এআইইউবির উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এম রাশিদুল হাসান, সহসভাপতি (অর্থ) ইকবাল আহমেদ ফখরুল হাসান, বেসিস পরিচালক মীর শাহরুখ ইসলাম ও বিপ্লব ঘোষ রাহুল এবং নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৪-এর আহ্বায়ক অভিজিৎ ভৌমিক ও নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশ পর্বের উপদেষ্টা মোহাম্মদ মাহদী-উজ-জামান।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্র্রেশন (নাসা) আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের ১৮৫টি দেশের প্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, নকশাকার, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, উদ্যোক্তার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রের মেধাবী তরুণদের একত্রিত করে বৈশ্বিক সমস্যা সমাধানে উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
এরই অংশ হিসেবে বেসিসের উদ্যোগে বাংলাদেশের ৯টি শহরে (ঢাকা, চট্রগ্রাম সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা) এ আয়োজন করেছে। নাসা স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জে এবার এক কোটি শিক্ষার্থীকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যুক্ত করার পাশাপাশি দুই লাখ শিক্ষার্থীর সরাসরি ও প্রতিযোগিতায় যুক্ত করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়।
এবার বাংলাদেশের ৯টি শহর থেকে তিন হাজারেরও বেশি প্রতিযোগী অংশ নিয়েছে। মোট ৫০০টি প্রকল্পের মধ্যে হাইব্রিড মডেলে বাছাই করা শীর্ষ ৫০ নিয়ে এআইইউবিতে এবং বাকি ৪৫০টি প্রকল্প নিয়ে ৪ থেকে ৫ অক্টোবর অনলাইনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুই দিনের এই হ্যাকথন।
অনুষ্ঠানে এআইইউবির উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা একটি নতুন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে আগাচ্ছি। এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে আমাদের প্রযুক্তির সব খাতে সমানভাবে উন্নয়ন করতে হবে। ‘নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৪’ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তরুণরা আরও বেশি উৎসাহ পাবে বলে আশা করি।
অনুষ্ঠানে বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ নতুন বাংলাদেশ অর্জনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের সম্মানে সবাইকে নিয়ে দাঁড়িয়ে সালাম প্রদান করার মাধ্যমে বক্তব্য শুরু করেন। তিনি বলেন, এখন সময় নতুন বাংলাদেশকে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার। আর এই দেশ গড়ার একটা ছোট্ট ধাপ হচ্ছে এই নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে শহিদদের অসম্পূর্ণ স্বপ্ন পূরণ করার দায়িত্ব এখন তোমাদের কাঁধে।
বেসিস সভাপতি জানান, বেসিস টানা ১১তম বারের মতো এই আয়োজন করছে। এর মধ্যে গত ছয় বছরে টানা তিনবারসহ মোট চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এ বছর বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে তিন তিনটি ক্যাটাগারিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব বয়ে আনবে বলে আশাবাদ জানান তিনি।
২০১৮ সালে চাঁদে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেওয়ার ভার্চুয়াল অ্যাপ্লিকেশন ‘লুনার ভিআর প্রজেক্ট’ তৈরি করে বেস্ট ইউজ অব ডাটা ক্যাটাগরিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম অলীক।
২০২১ সালে ‘বেস্ট মিশন কনসেপ্ট’ ক্যাটাগরিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির (বাউয়েট) সম্মিলিত দল ‘টিম মহাকাশ’। এরপর ২০২২ সালে ‘টিম ডায়মন্ডস’ সবচেয়ে অনুপ্রেরণামূলক বিভাগে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। সবশেষ নাসা ইন্টারন্যাশনাল স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জ ২০২৩-এর বেস্ট স্টোরিটেলিং ক্যাটাগরিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশের টিম ভয়েজার্স।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, টানা ৩৬ ঘণ্টার হ্যাকথন শেষে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় এআইইউবিতে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে থাকবেন এআলইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন নাদিয়া আনোয়ার।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর