Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বজ্রপাতে ৭ মাসে ২৯৭ প্রাণহানি, ৫১% কৃষক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫৭

ঢাকা: দেশে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সবশেষ সাত মাসে বজ্রপাতে প্রাণহানির শিকার হয়েছেন ২৯৭ জন। সে হিসাবে প্রতি মাসে বজ্রপাতের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৬ জনের বেশি। বজ্রপাতে প্রাণহানির শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৫২ জনই কৃষক, যা মোট প্রাণহানির ৫১ শতাংশের বেশি।

এদিকে এককভাবে মাসের হিসাবে বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে মে মাসে— ৯৬ জন। জুন মাসে মারা গেছেন ৭৭ জন। দেশের তিন জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট ও হবিগঞ্জে সর্বোচ্চ ১৩ জন করে মারা গেছেন বজ্রপাতে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে সেগুনবাগিচা কার্যালয়ে সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা, কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশনের স্ক্রল থেকে বজ্রপাতে হতাহতের এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মোট ২৯৭ প্রাণহানির মধ্যে ২৪২ জনই পুরুষ, বাকি ৫৫ জন নারী। শিশুর সংখ্যা ১১টি, কিশোরী ছয়জন, কিশোরের সংখ্যা ১৭।

এ বছর কেবল কৃষিকাজের সময় বজ্রপাতে ১৫২ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গরু আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন। এ ছাড়া মাছ ধরার সময় ৫২ জন জেলের মৃত্যু হয়েছে। আম কুড়ানোর সময় ১১ জন, ফাঁকা রাস্তায় চলাচলের সময় ১৫ জন, ঘরে থাকাকালীন ২৭ জন, পাথর উত্তোলনের সময় তিনজন, বাড়ির আঙিনায় খেলার সময় ১৪ জন শিশু-কিশোর ও গাড়িতে থাকাকালীন একজনের মৃত্যু হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন মাসে বজ্রপাতে হতাহতের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসে বজ্রপাতে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। ফেব্রুয়ারি মাসে মারা গেছেন একজন, মার্চ মাসে ৯ জন, এপ্রিল মাসে ৩১ জন। মে মাসে সর্বোচ্চ ৯৬ জন মারা গেছেন বজ্রপাতে, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৭ জন মারা গেছেন জুন মাসে। এ ছাড়া জুলাই ১৯ জন, আগস্ট মাসে ১৭ ও সেপ্টেম্বর মাসে একক মাস হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪৭ জন মারা গেছেন।

বিজ্ঞাপন

বজ্রপাতে তিন জেলায় সর্বোচ্চ ১৩ জন করে প্রাণ হারানোর তথ্য আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। এর বাইরে ফেনীতে ১২ জন এবং কক্সবাজার ও গাইবান্ধায় ১০ জন করে মারা গেছেন বজ্রপাতে।

সংবাদ সম্মেলনে সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো—

  • পাঠ্যপুস্তকে বজ্রপাত নিয়ে সচেতনতার অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা;
  • ৩০ মিনিট আগেই বজ্রপাতের পূর্বাভাস জানা যায়, গভ ইনফোর (সরকারি তথ্য বিবরণী) মাধ্যমে তা জানানো;
  • কৃষক ও জনসাধারণের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা;
  • মাঠে মাঠে শেল্টার সেন্টার স্থাপন; এবং
  • আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া।

সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও বজ্রপাতে সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন কৃষিকাজের যুক্ত খেটে খাওয়া মানুষ। বজ্রপাত থেকে মানুষের জীবন রক্ষায় একাধিক মন্ত্রণালয়ের বড় বড় প্রকল্প হাতে নেওয়ার কথা শুনে আসছি। কিন্তু সেগুলোর কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। শুধু সচেতনতার অভাবেই বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের গবেষণা সেলের প্রধান নির্বাহী আবদুল আলীম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফারুক হোসেন।

সারাবাংলা/টিআর

বজ্রপাত বজ্রপাতে প্রাণহানি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর