বেতন-ভাতাসহ পদোন্নতিতে বৈষম্য দূর করার দাবি শিক্ষকদের
৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৫৯
সরকারি কলেজের শিক্ষকরা বেতন-ভাতাসহ পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্য দ্রুত নিরসনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ও শিক্ষা উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অন্যথায়, আন্দোলনের মতো বিকল্প পথ বেছে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বুধবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আকরাম খাঁ মিলনায়তনে বাংলাদেশ সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদ (চ) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তারা এই হুঁশিয়ারি দেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষক নেতা কে এম দেলোয়ার। বক্তব্য দেন আনিসুর রহমান, নাসির উদ্দিন, মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, বিলকিস জাহান, মো: ইসমাইল হোসেন, খন্দকার আব্দুল আলিম প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় শিক্ষকরা ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-
১. সরকারি কলেজের শিক্ষকদের জন্য দ্রুত পদসোপান তৈরিসহ পদোন্নতির নীতিমালা প্রণয়ন করে প্রভাষক হতে সহকারী অধ্যপক, সহকারী অধ্যাপক হতে সহযোগী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক হতে অধ্যাপক পদে এনাম কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী পদোন্নতি দিয়ে বদলি ব্যবস্থা চালু করা ও অবিলম্বে বকেয়া বেতন পরিষোধ এবং নিয়োগ প্রাপ্ত সকল শিক্ষক কর্মচারীদের অতি দ্রুততম সময়ে চাকরি স্থার্য়ীকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
২. টাইম স্কেল প্রাপ্ত বা সপ্তম গ্রেডধারী শিক্ষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি ও আর্থিক অবদমন রোধ করে বে-সরকারি আমলে বিদ্যমান স্থায়ী গ্রেডে, স্বীয় স্কেলের চলমান ধাপে বেতন-ভাতাদি চালু রাখা এবং শতভাগ চাকরিকাল গণনাসহ জ্যেষ্ঠতা নির্ধারন করা।
৩. অবিলম্বে নন ক্যাডার রিক্রুটমেন্ট রুলস অ্যান্ড কম্পোজিশন তৈরি করে সে অনুযায়ী নন ক্যাডার শূন্য পদের বিপরীতে পিএসসিতে নন ক্যাডার শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যামে শূন্য পদ পূরণ করা এবং নন ক্যাডার শূন্য পদে ক্যাডার পদ হতে অধ্যক্ষ বা উপাধ্যক্ষ অথবা সহকারি অধ্যাপক প্রভাষকসহ কোন পদে প্রেষণে কিংবা ডেপুটেশনে নিয়োগ প্রদান না করা।
৪. বেসরকারি আমলে কর্মরত কোন শিক্ষক কর্মচারীকে প্যাটার্ন অথবা অন্য কোন অজুহাতে বঞ্চিত না করা এবং অনার্স মাস্টার্স পর্যায়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সেমিনার সহকারি, সহায়ক, কম্পিউটার অপারেটর আত্মীকরণের ব্যবস্থা করা।
৫. প্রতিষ্ঠান সরকারীকরণের তারিখ হতে কল্যাণ ট্রাস্টে এমপিও হতে কেটে রাখা অর্থ ফেরত দেওয়া। বক্তারা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড.মোহাম্মদ ইউনুস মহোদয়ের নেতৃত্বে পঠিত অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষা খাতে বিরাজমান সকল প্রকার বৈষম্য দূর করবে এবং জাতি গড়তে কারিগর শিক্ষকগণ তাদের হারিয়ে যাওয়া মর্যাদা ও উপযুক্ত সম্মান ফিরে পাবেন।
বক্তারা মনে করেন, সাকার কলেজবিহীন প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কলেজ সরকারীকরণ করা হলেও শিক্ষা খাতে তৎকালীন সময়ে সীমাহীন দুর্নীতি শিক্ষক স্বার্থ বিরোধী, বৈষম্যমূলক আর্থীকরণ বিধিমালা ২০১৮ এর কালো বিধির কারণে আত্তীকৃত শিক্ষক- কর্মচারীবৃন্দ সরকারি কলেজে চাকরি করেও বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার হয়ে অনেক সরকারি সুবিধা হতে বঞ্চিত হয়েছে। এর ফলে ব্যাহত হচ্ছে সরকারি কলেজের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ। শিক্ষক কর্মচারীদের আত্তীকরণের ধারাবাহিকতা অনুসরণ না করে আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮ তে ভিন্ন নিয়ম চালু হয়েছে যা বৈষম্যমূলক ও মানবাধিকার পরিপন্থী।
সভা শেষে নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টার কাছে একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি প্রদানে নেতৃত্ব দেন আনিসুর রহমান সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন,সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন, বিদির শিক্ষক নেত্রী বিলকিস জাহান, যুগ্ম সম্পাদক মানিক দিয়া মুচ্ছি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন দুইয্য, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফজলুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, যন্দকার আঃ আলিম, মাজহাবুল ইসলাম, বাবু শিবু শংকং, শিক্ষক নেতা আব্দুর রশিদ, শিক্ষক রুবাইয়্যাত, সাদিকুল ইসলাম, মাসুম মজুমদার, গাজী এনামুল হক, রাসেল বিশ্বাস, মোহাম্মদী শওকতুজ্জামান প্রমুখ।
সারাবাংলা/এ এইচ এইচ/এসডব্লিউআর