‘দেশে তিন কোটিরও বেশি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রয়োজন’
৯ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৩০
ঢাকা: দেশে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সেবায় নিয়োজিতদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। কর্মক্ষেত্রে মানুষের নিরাপদ কাজের পাশাপাশি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দেশে বর্তমানে ৩ কোটিরও বেশি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রয়োাজন।
বুধবার (৯ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজধানীর শ্যামলীতে ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সভাকক্ষে এক আলোচনা সভায় এ সব কথা উঠে আসে। বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভাটি আয়োজন করে আহছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র।
এ বছর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য, অগ্রাধিকার দেওয়ার সময় এখনই।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতির (বিপিএ) মহাসচিব ড. মো. শামসুদ্দীন ইলিয়াস। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কাউন্সেলর ফাতেমা তাশরিন মিতু ও মাহমুদা আলম। আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সিনিয়র সাইকোলজিষ্ট রাখী গাঙ্গুলী।
সভায় বক্তারা বলেন, কর্মক্ষেত্র ও মানসিক স্বাস্থ্য এই দুইটা বিষয় ঘনিষ্টভাবে জড়িত। সহযোগীতামূলক কর্ম পরিবেশ, কাজের উদ্দেশ্য ও দৃঢ়তা এই বিষয়গুলো থাকলে কাজের গতি বাড়ায়। এছাড়াও তারা আরও বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বিভিন্ন ঝুঁকি রয়েছে। কর্মীর বৈষম্য, খারাপ কাজের পরিস্থিতি বা সীমিত স্বায়ত্তশাসন যা মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শুধুমাত্র হতাশা এবং উদ্বেগের কারণে প্রতি বছর প্রায় ১২০০ কোটি কর্মদিবস নষ্ট হয়। কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপকে বুঝতে এবং তা মোকাবেলা করার জন্য ব্যবস্থাপকদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা উচিত। এ ছাড়াও কর্মক্ষেত্রে আমরা সুস্থ্য কর্মপরিবেশ তৈরি করা, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করা, পর্যাপ্ত বিরতি ও বিশ্রাম নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে অফিস সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করার চর্চা করা, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করা এবং মেন্টাল হেলথ সাপোর্ট প্রোগ্রাম চালু করার মাধ্যমে আমরা মনের যত্ন নিতে পারি।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ২০১৮-১৯ এর জরিপে বলছে, প্রাপ্ত বয়স্কদের ১৭ শতাংশের লঘু থেকে গুরুতর মাত্রার মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে নারী ১৯ ও পুরুষ ১৫ শতাংশ। এ ছাড়া ১৮ বছরের নিচের জনগোষ্ঠীর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ১৩.৬ শতাংশ। কিন্তু এর বিপরীতে মনোচিকিৎসক, মনোবিজ্ঞানী, ও অন্যান্য প্রশিক্ষিত মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীর সংখ্যা এক হাজারের নিচে। ফলে সব বয়সীদের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশের বেশি ট্রিটমেন্ট গ্যাপ রয়েছে।
সভায় আলোচকরা বলেন, যারা মাদকাসক্তি চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, রিহ্যাব সেন্টার, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেন তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। এজন্য কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারলে কাজের মান বৃদ্ধি পাবে।
সারাবাংলা/এসবি/এইচআই
সারাবাংলা/এসবি/এইচআই