Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সামরিক কর্মকর্তাকে সমুদ্র গবেষণার ডিজি নিয়োগে বিজ্ঞানীদের প্রতিবাদ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১০ অক্টোবর ২০২৪ ০০:২৬

ঢাকা: নৌ বাহিনীর এক কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (বোরি) মহাপরিচালক পদে নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়েছে সংস্থাটিতে কর্মরত সমুদ্রবিজ্ঞানীসহ কর্মচারীরা। এ পদে তারা সংশ্লিষ্ট কোনো গবেষককে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।

পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি ও পেনশন সুবিধা দেওয়ার দাবিও তুলেছেন দেশের একমাত্র সমুদ্রবিষয়ক এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান বোরির বিজ্ঞানী ও কর্মচারীরা। দাবি আদায় না হলে কর্মবিরতিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবাদ ও দাবি-দাওয়া নিয়ে বুধবার (৯ অক্টোবর) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে এক স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন বোরির বিজ্ঞানী ও কর্মচারীরা। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের মাধ্যমে পাঠানো স্মারকলিপিতে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির ৫২ জন বিজ্ঞানী ও কর্মচারী সই করেছেন।

এর আগে গত ৭ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজারে অবস্থিত ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক কমডোর মো. মিনারুল হককে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ খবর প্রকাশ হলে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরতরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। প্রতিবাদে তাার স্মারকলিপি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর।

ছাত্র-জনতার বিপ্লব ও অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারে একাত্মতা জানিয়ে বোরির কর্মীরা স্মারকলিপিতে লিখেছেন, সম্প্রতি দেশে সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিবর্তন করা হচ্ছে, যা সরকারের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমরা জানতে পেরেছি, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন এ রকম জটিল ও নিবিড় বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে একজন সামরিক কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থবির হয়ে পড়বে এবং প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা হারাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে স্মারকলিপিতে। বলা হয়েছে, এ কারণে এই প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী একত্রিত হয়ে আবেদন জানাচ্ছি, মহাপরিচালক পদে আমরা কোনো সামরিক কর্মকর্তার নিয়োগ চাই না। কোনো স্বনামধন্য বিজ্ঞানী, গবেষক, একাডেমিশিয়ান বা সিভিল প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা বা যোগ্য অন্য যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ দিলে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো আপত্তি নেই।

দাবি-দাওয়া তুলে ধরে স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, এ প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পর থেকে শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও এ পর্যন্ত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও বিদ্যমান অস্থায়ী বা শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ী করা হয়নি। প্রতিষ্ঠান তৈরির পর থেকে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্লক পোস্টে কর্মরত আছেন। এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশন সুযোগ নাই। জব সিকিউরিটি নেই। এসব দাবি পূরণের মাধ্যমে একটি স্বাভাবিক ও সহমর্মিতার পরিবেশ তৈরি করে দেশের স্বার্থে কাজ করার সুযোগ তৈরি করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বোরির বিজ্ঞানী ও কর্মচারীরা। তারা লিখেছেন, আমরা সরকারের সব কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে বদ্ধ পরিবর। তবে দাবিগুলো পূরণ না হলে আন্দোলনসহ কর্মবিরতি পালন করতে আমরা বাধ্য হব।

এর আগে বোরির মহাপরিচালক ছিলেন অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়াবিদ্যা বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সাবেক শিক্ষক। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি শিল্প মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন ড. তৌহিদা। পরে ২০২২ সালে ফের ঢাবি সিনেট সদস্য নির্বাচিত হন। সাউথ এশিয়ার মিটিওরোলজিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক পদে ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর যোগ দিয়েছিলেন অধ্যাপক তৌহিদা রশীদ। এক বছরের মাথায় তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/টিআর

ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট কক্সবাজার বোরি বোরি মহাপরিচালক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর