ডিসি নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে এবার ৩ উপদেষ্টার কমিটি
১০ অক্টোবর ২০২৪ ০২:৪৬
ঢাকা: জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতি খুঁজে বের করতে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছিলেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা। এবার ওই তিন উপদেষ্টাকে নিয়েই তদন্তের জন্য উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গঠন করে দিয়েছে সরকার।
আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সই করা প্রজ্ঞাপনে কমিটির কর্মপরিধিও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, সম্প্রতি জেলা প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়ে দৈনিক কালবেলাসহ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৩ অক্টোবর প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে ওই অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, কমিটি প্রয়োজনে সদস্য কো-অপস্ট (পরে অন্তর্ভুক্ত) করতে পারবে। কমিটির সভা প্রয়োজন অনুযায়ী হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে সমাজকল্যাণবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ ডিসি নিয়োগে অনিয়ম খুঁজতে তিন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘তাৎক্ষণিক যে সিদ্ধান্ত হয়েছে— উপদেষ্টা পরিষদ এটা নিয়ে কাজ করবে। দ্রুত এর তদন্ত করতে হবে। আমরা অবশ্যই তদন্ত করব।’ এর এক সপ্তাহের মধ্যেই তিন উপদেষ্টাকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের প্রজ্ঞঅপন জারি করল সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় থেকেই প্রশাসনে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দেয়। এর মধ্যেই প্রায় সব জেলার ডিসিকে অপসারণ করা হয়, নিয়োগ দেওয়া হয় নতুন ডিসি। সেই প্রক্রিয়াতেই ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি ও কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানসহ কয়েকজন কর্মকর্তা এসব অনিয়মে জড়িত ছিলেন বলে খবর আসে গণমাধ্যমে।
শুরুতেই আলোচনায় আসে তিন কোটি টাকার একটি চেক। সবশেষ দৈনিক কালবেলা এক প্রতিবেদনে ডিসি নিয়োগ নিয়ে ভয়াবহ কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং বিতর্কিত দুই যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযমের সরাসরি জড়িত থাকার তথ্য উঠে এসেছে তাতে।
প্রতিবেদনে সিনিয়র সচিবের সঙ্গে যুগ্ম সচিবের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের চিত্রও বেরিয়ে এসেছে। সেই কথোপকথনে দেখা যায়, ডিসি নিয়োগ নিয়ে রীতিমতো কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে।
সারাবাংলা/টিআর
উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ডিসি নিয়োগ ডিসি নিয়োগে অনিয়ম তদন্ত কমিটি