‘গণহত্যাকারী-দুর্নীতিবাজদের জামিন দেওয়া তামাশার সামিল’
১১ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৪৫ | আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:২৮
ঢাকা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ‘গণহত্যাকারী, হত্যার নিদের্শদাতা, হত্যাকাণ্ড চালাতে সহায়তা করা, দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও তাদের দোসরদের আটক করেই জামিন দেওয়া জনগণের সাথে তামাশার শামিল।’
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর শান্তিপুর কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী খিলগাঁও জোনের ইউনিট সভাপতি-সেক্রেটারী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, অতীতে জামায়াতে ইসলামীসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে যতদিন রিমান্ডে রাখা হয়েছে ততদিন আওয়ামী লীগের নেতাদের কারাগারেও রাখা হচ্ছে না। এই বৈষম্য কেনো প্রশ্ন রেখে ড. মাসুদ বলেন, ‘আমরাও চাই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হোক। জামিনযোগ্য মামলায় জামিন লাভ করুক। কিন্তু আটক করেই জামিন চাওয়া মাত্র জামিন! এটা কখনো ন্যায় বিচার হতে পারে না। এটা কেবলই একটি দল বা গোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া।’
খিলগাঁও জোন পরিচালক মাওলানা ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও খিলগাঁও-মুগদা থানা আমীর মাহমুদুর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে ড. মাসুদ আরো বলেন, ‘অপরাধীদের আটক করেই জামিন দিয়ে দেওয়া কখনো ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা নয়। কার স্বার্থে বা কোন স্বার্থে আটকের পরই জামিন হচ্ছে তা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রকাশ করার আহ্বান জানান।’
তিনি বলেন‘ ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে বেইমানি করলে, জামায়াত-শিবির লাগবে না আদালত পাড়ায় শহীদ ও আহত বহু পরিবার রয়েছে তারাই বাধ্য হবে গণহত্যাকারী, হত্যার নিদের্শদাতা, হত্যাকাণ্ড চালাতে সহায়তা করা, দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও তাদের দোসরদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠাবে।’
এরআগে শুক্রবার সকালে সবুজবাগ পূর্ব থানা আমীর মো. রওশন জামানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী ফাইজুর রহমানের সঞ্চলনায় সবুজবাগ পূর্ব থানা কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে স্থায়ী শান্তির জন্য ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নাই। মানুষের তৈরী তন্ত্রমন্ত্রে রচিত সংবিধান কেবলমাত্র ক্ষমতাসীনদের জন্য রচিত হয়, দেশের নাগরিকদের জন্য নয়। মানুষের তৈরী মতবাদে সমাজে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি, হবেও না। সেজন্য রাষ্ট্র সংস্কারে গঠিত সংস্কার কমিশনকে কুরআন অনুসরণ করে সংস্কার করতে হবে। নয়তো দেশের মানুষের কাঙ্খিত নতুন বাংলাদেশ গঠিত হবে না। তা না হলে আবারও অতিতের লুটপাটকারী, দুর্নীতিবাজ, দখলবাজদের হাতে বাংলাদেশ চলে যাবে। যারা মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে দেয়নি তাদেরকে আর দেশের নেতৃত্বে আনা যাবে না, আসতে দেওয়া হবে না।’
ড. মাসুদ উপস্থিত কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘একটি দলের প্রাণ হচ্ছে কর্মী। কর্মীদের রাজনৈতিক শিষ্টাচার, মূল্যবোধ, মানবিকতা, নৈতিকতা ও আদর্শ সৃষ্টি হয় নেতাদের থেকে। কিন্তু যেই দলের প্রধানসহ নেতারা চোর, খুনি, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, দখলদ্বার সেই দলের কর্মীও ঠিক নেতার মতই হয় এবং হবে। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা চুরি করে না, লুটপাট করে না, চাঁদাবাজি, সন্ত্রসী, দখলদারিত্ব করে না যার ফলে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীরাও নেতাদের মতই মানবিক, নৈতিকতা সম্পূর্ন ও আদর্শবান হয়ে থাকে। জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক অন্যতম কর্মসূচি হচ্ছে নাগরিকদের আদর্শ মানুষ হিসেবে তৈরি করা। কারণ এই নাগরিক থেকেই নেতা তৈরি হবে, দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দিবে। জনগণের জানমালের পূর্ণ নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারবে কেবল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এটি দুর্নীতিবাজ, লুটেরা, সন্ত্রাসীরা সবচেয়ে ভালো বুঝে এবং জানে ও বিশ্বাস করে। সেজন্যই তারা চায় না ইসলাম প্রতিষ্ঠা হোক, জামায়াতে ইসলামী দেশ পরিচালনা করুক। কারণ জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতা গেলে তারা আর অপকর্ম করতে পারবে না। এজন্যই তারা জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের সকল অপপ্রচার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আগামীতেও রুখে দিতে তিনি উপস্থিত কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।’
সারাবাংলা/জিএস/এসআর