Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে আনন্দ-অশ্রুতে দেবী দুর্গাকে বিদায়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৩০

চট্টগ্রাম: জেলার নগরীতে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ চার স্থানে এবার প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে। পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে লাখ লাখ হিন্দুধর্মাবলম্বীরা ঢাকের বাদ্য, খোল-করতাল ও গান বাজিয়ে দুর্গা মাকে বিদায় জানিয়েছে।

রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুর থেকে পতেঙ্গা সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। এছাড়াও নগরীর পাথরঘাটা গঙ্গাবাড়ির কর্ণফুলী ঘাট, কালুরঘাট এলাকায় ও কাট্টলী রানী রাসমনি ঘাটেও প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছিল ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী তিথিতে বেলতলায় ‘আনন্দময়ীর’ নিদ্রাভঙ্গের বন্দনার মাধ্যমে। এবার তিথির কারণে মহানবমী পূজার পরই একই দিনে দশমীর বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়। রোববার প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে এ উৎসব শেষ হয়েছে।

এদিকে দেবীকে তেল-সিঁদুর পড়িয়ে বিদায় জানাতে সৈকতে ভিড় করেছিলেন ভক্ত ও অনুরাগীরা। নানা ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান মিলনমেলায় পরিণত হয়।

বিসর্জন অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন ছিল পুলিশ, র‍্যাব, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

শনিবার (১২ অক্টোবর) নগর পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিমা বহনকারী গাড়িকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, ‘শান্তিপূর্ণভাবেই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে শত শত প্রতিমা বিসর্জন করা হচ্ছে। সন্ধ্যার মধ্যেই প্রতিমা বিসর্জন করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। যেকোনো প্রকার বিচ্ছিন্ন ঘটনা এড়াতে সৈকত ও আশপাশ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে রোববার বিকেলে নগরীর ১৫ নম্বর ঘাট এলাকায় বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড, পূর্ব জোনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও অভয়মিত্র ঘাট এলাকায় কোস্ট গার্ডের টহল ও ডুবুরি দল নিয়োজিত আছে। গত ১ অক্টোবর থেকে শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে কোস্টগার্ড দুই ধাপে নিরাপত্তা দিচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কোনো সহিংসতার তথ্য তারা পায়নি।

পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার পালিত সারাবাংলাকে জানান, ‘এবছর নগরীতে শারদীয় দুর্গাপূজা জেএমসেন হলসহ ২ হাজার ৪৫৮টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে নগরীতে ২৯৪টি ও জেলার ১৫টি উপজেলায় পূজামণ্ডপ আছে ২ হাজার ১৬৫টি। জেলার ১৫টি উপজেলায় ২ হাজার ১৬৫টি মণ্ডপের মধ্যে প্রতীমা পূজা ১ হাজার ৫৯৪টি বাকিগুলো ঘটপূজা।’

পটিয়া, হাটহাজারী ও ফটিকছড়িসহ বেশকিছু উপজেলায় কয়েকটি প্রতিমা স্থায়ীভাবে আছে, যেগুলো আগামী বছরও থাকবে। পরিষদের পক্ষ থেকে সবাইকে রোববার সন্ধ্যার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

রোববার বিকেলে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিময় সম্প্রীতির জনপদ। এখানে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মাচরণ পালনের অধিকার আছে। এদেশে ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই। ধর্ম নির্বিশেষে সবাই ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করেন। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রকৃত ধার্মিক ও মানবিক মানুষের সুদৃঢ় ঐক্যে শান্তির বাংলাদেশ গড়তে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এ সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। বিগত বছরগুলোর ন্যায় এবারও শারদীয় দূর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে পূজা মন্ডপে পরিচ্ছন্নতা, আলোকায়ন, পানীয়-জলের ব্যবস্থা এবং পূজার্থীদের নিরাপত্তাসহ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা নিরঞ্জনের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

সারাবাংলা/আইসি/এইচআই

চট্টগ্রাম দেবী দুর্গাকে বিদায়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর