Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আজাদ কাশ্মির থেকে অপহরণের শিকার ২৯ শিশু উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:১২

শিশু পাচারকারী বড় একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে পাকিস্তানি পুলিশ। আজাদ জম্মু ও কাশ্মিরের কোটলি জেলায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয়েছে অপহরণের শিকার ২৯ শিশুকে, যাদের প্রত্যেককেই একাধিকবার যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। পাচারকারী চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, লাহোর পুলিশের অরগানাইজড ক্রাইম ইউনিটের অপহরণবিরোধী অ্যান্টি-কিডন্যাপ ফর র‌্যানসম ইউনিট (একেআরইউ) এবং আজাদ জম্মু ও কাশ্মীর যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে শিশুদের উদ্ধার করে।

বিজ্ঞাপন

উদ্ধার হওয়া শিশুদের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর। তাদের লাহোরের হজরত আলি উসমান হাজভারি (রহ.) দাতা বখশ মাজারের আশপাশের এলাকা থেকে অপহরণ করে আজাদ কাশ্মিরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সশস্ত্র পাহারায় রাখা হয়েছিল তাদের।

অভিযানে গ্রেফতার তিনজন হলেন— ইমরান, আলি রাজা ও আলি নওয়াজ। এদের মধ্যে ইমরান এই শিশু পাচার চক্রের অন্যতম হোতা। ‘কানপাতা’ ছদ্মনামে পরিচিত তিনি। কাজের বিনিময়ে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ও প্রতিদিন দুই হাজার পাকিস্তানি রুপি মজুরির লোভ দেখিয়ে তিনি শিশুদের তুলে নিতেন।

পুলিশ বলছে, এতিম ও হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের কাছে তাদের এই প্রস্তাব অত্যন্ত লোভনীয় হওয়ায় তারা ইমরানের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যেত। ইমরান তাদের পাঞ্জাবের নারোয়াল জেলার অধিবাসী চক্রের আর দুই সদস্য নাসির ও তার ছেলে আলির কাছে বিক্রি করে দিত। নাসির ও আলি শিশুদের নিয়ে যেত আজাদ কাশ্মিরের কোটলি জেলায়।

কোটলি জেলার সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসএসপি) আদিল আহমেদ ল্যাংরিয়াল বলেন, অপহরণের শিকার এক শিশু পাচারকারীদের হাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তার থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লাহোর পুলিশ ওই চক্রকে ধরতে আমাদের কাছে সহায়তা চেয়েছিল। পরে শুক্রবার অভিযান চালিয়ে কোটলির দুটি এলাকা থেকে অপহরণের শিকার ২৯ শিশুকে উদ্ধার ও তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

এসএসপি আদিল বলেন, সেহনসা এলাকায় লাহোরের পুলিশ কাশ্মির ওয়াতান ম্যারেজ হলে অভিযান চালিয়ে ১৫টি শিশুকে উদ্ধার করে। এসব শিশুকে নাসির ক্যাটারিংয়ের কাজে নিযুক্ত করেছিল। পরে কোটলি শহরে নাসিরের ভাড়া বাসা থেকে আরও আট শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। সেখান থেকে নাসিরের ছেলে আলী রাজা ও তার সহকারী আলী নেওয়াজকেও আটক করা হয়। এ ছাড়া লাহোর থেকে আসা একটি বাসে করে আরও ছয় শিশুকে পাচার করে আনা হচ্ছিল। তাদেরও বাস থেকে উদ্ধার করা হয়।

লাহোর অরগানাইজড ক্রাইম ইউনিটের ডিআইজি ইমরান কিশোয়ার জানান, শিশু পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক একজনের কাছ থেকে এই চক্রের খবর পাওয়া যায়। জানা যায়, বছরের পর বছর ধরে চক্রটি শিশু পাচার করে আসছে।

এসব তথ্যের ভিত্তিতে লাহোর পুলিশ আজাদ কাশ্মিরের আইজিপি রানা আবদুল জব্বারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং গোপনে যৌথ অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করে। সে অনুযায়ীই আজাদ কাশ্মিরের কোটলিতে অভিযান চালিয়ে ২৯ শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

ডিআইজি ইমরান কিশওয়ার বলেন, পরিবারহীন ও বাস্তুচ্যুত ১৪ থেকে ২০ বছর বয়সী শিশুদের অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হতো। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে নিষ্পাপ এসব শিশুদের অবৈধভাবে আটকে রেখে কাজে বাধ্য করা হতো। মূলত ক্যাটারিং খাতে তাদের নিয়োজিত করা হতো। কাজের জন্য স্বাধীনতা বা অর্থ দাবি করলে শিশুদের শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করা হতো।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, ‘কানপাতা’ হিসেবে পরিচিত ইমরানের মাধ্যমে পাচার হতো শিশুরা। তার সঙ্গে নাসির ও আলী মিলিয়ে শিশুদের চুক্তিবদ্ধ শ্রমের মাধ্যমে প্রতিদিন ৭৫ হাজার রুপি থেকে এক লাখ রুপি পর্যন্ত আয় করত। এসব শিশুকে বলতে গেলে দাস হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

সারাবাংলা/এমপি/টিআর

অপহরণ পুলিশ শিশু

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর