যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গোলা ও বোমাবর্ষণে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কমপক্ষে ৫০ জন।
গাজার হামাস পরিচালিত সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি রোববার (১৩ অক্টোবর) নুসেইরাত আশ্রয় শিবির এলাকার আল-মুফতি স্কুলে গোলাবর্ষণের ওই ঘটনায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গাজার উত্তরাঞ্চলে হামলা জোরদার করছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের হামলায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজা কর্তৃপক্ষ। এর আগে গাজার উত্তরাঞ্চলে আল-শাতি ক্যাম্পের একটি রাস্তার মোড়ে খেলার সময় ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচ শিশু নিহত হয়।
একজন বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র বলেছেন, ‘আল-মুফতি নামে আরো একটি স্কুলে হামলায় আরো বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে। গাজার আশেপাশের শত শত বাস্তুচ্যুত মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল। এ ছাড়া এ ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে।‘
সিএনএনের ফুটেজে দেখা গেছে, অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশুদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাদের মুখ রক্তে ঢেকে গেছে এবং তাদের মধ্যে অনেকেই চিৎকার করছে এবং কাঁদছে। একটি মেয়ে হাসপাতালের মেঝেতে শুয়েছিল। মেয়েটি কাঁপছে এবং তার শরীর মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে।
আয়মান আবু খুসা গণমাধ্যমকে বলছিলেন, ‘আমরা প্রতিদিন মারা যাচ্ছি। বিশ্ব আমাদের বিক্রি করে দিয়েছে। প্রতিদিন আপনারা (সাংবাদিকরা) এখানে আসেন এবং আমাদের ছবি তোলেন।’
স্কুলটিতে আশ্রয় নেওয়া আরেক মহিলা ইফতেখার হামউদা বলেন, ‘কেন তারা স্কুলে বোমা মারছে? এখানে সব বাস্তুচ্যুত মানুষ, বেশিরভাগই নারী। এখানে কোন হামাস সদস্য নেই। এখন ফিলিস্তিনিরা কোথায় যেতে পারে? তারা কোথায় পালাবে? ইসরায়েল আমাদের বাড়িতে, আমাদের তাঁবুতে, রাস্তায় এবং স্কুলে আঘাত করছে।’
এদিকে হামলার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা এই ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করবেন।
এ অঞ্চলের হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, নয় দিনের প্রচেষ্টার পর রেড ক্রসের সঙ্গে একটি যৌথভাবে পুনরায় সরবরাহ শুরু করতে পেরেছে তারা।
গাজার ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ১৯ লাখ যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী ও শিশু।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক বছর আগে হামাসকে নির্মূল করার কথা বলে হামলা শুরু করা ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ৪২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে।