দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরকারকে আইনি নোটিশ
১৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৪২
ঢাকা: দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে, অসাধু সিন্ডিকেট ভাঙতে, বাজার মনিটরিং বৃদ্ধি, চাঁদাবাজি বন্ধ এবং দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সরকারের অর্থ উপদেষ্টা, কৃষি উপদেষ্টা, বাণিজ্য সচিব, কৃষি সচিব, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে এই নোটিশ পাঠানো হয়।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নাদিম মাহমুদ নোটিশটি পাঠিয়েছেন।
নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী নাদিম মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত দুই তিন সপ্তাহ ধরে বাজারে অস্বাভাবিকভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে। অবৈধ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম, বাজারে চাঁদাবাজি বৃদ্ধি এবং সঠিকভাবে বাজার তদারকির অভাবে সাধারণ মানুষের ত্রাহি অবস্থা।‘
তিনি আরও বলেন, ‘এ কারণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইনি নোটিশ পাঠিয়েছি। নোটিশ প্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছি, অন্যথায় এর প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করব।’
নোটিশে বলা হয়, একাধিক দৈনিক পত্রিকা এবং গণমাধ্যমে বাংলাদেশের পাইকারী ও খুচরা বাজারে অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবেদন প্রচারিত হলেও শুধুমাত্র কাগজে-কলমে টাস্কফোর্স, ও ভোক্তা অধিদপ্তরের নাম মাত্র অভিযান পরিচালনা করা ছাড়া বাস্তবিক অর্থে দ্রব্যসামগ্রীর কোন দাম কমেনি বরং দিন দিন তা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের বাইরে চলে গেছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা বন্যা ও বৃষ্টির অজুহাতে দাম বৃদ্ধির কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পাইকারী ও খুচরা বাজারে প্রচুর মুনাফা করে অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করেছে, পাশাপাশি নামে-বেনামে চাঁদাবাজির কারণেও দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আইনি নোটিশে আরও বলা হয়, আপনারা অত্র লিগ্যাল নোটিশ গ্রহীতাগণ বাজারে দ্রব্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নাম মাত্র টাস্কফোর্স গঠন করেছেন এবং উক্ত টাস্কফোর্স গঠন করার প্রায় এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও বাস্তবিক অর্থে দ্রব্য সামগ্রীর দাম না কমে দিন দিন বেড়েই চলেছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, দ্রব্য সামগ্রীর অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভঙ্গ করার জন্য, বাজারে অসাধু ফরিয়া ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য, বাজারে নামে-বেনামে চাঁদাবাজি বন্ধ করার জন্য, বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার বাস্তবিক কার্যক্রম বৃদ্ধি জোরদার করার জন্য, টাস্কফোর্সের বাস্তবিক কার্যক্রম জোরদার করার জন্য এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সরাসরি সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে পাইকারী ও খুচরা বাজারে দ্রব্যের স্বাভাবিক দাম নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম ও পদক্ষেপ গ্রহণ করা একান্ত জরুরি।
অত্র নোটিশপ্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে কৃষক পর্যায়ে থেকে সরাসরি পাইকারী বাজারে অবাধে পণ্য প্রবেশের পরিবেশ তৈরি, ফরিয়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়া ও তাদের আইনের আওতায় আনা, প্রতিটি বাজারে ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা, পাইকারী বাজারে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে ও তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের আওতায় পর্যাপ্ত অভিযান পরিচালনা করে চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়ার বাস্তবিক ব্যবস্থা, অসাধু-মজুতদারদের আইনের আওতায় আনার জন্য দ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত পর্যাপ্ত অভিযান পরিচালনা করা এবং নোটিশ গ্রহীতাগণদের আওতাধীন সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুক্রবার ব্যতিত অন্যান্য সকল ছুটি বাতিল করে অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
নোটিশে আরও বলা হয়, দ্রব্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনাবাহিনীর সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে জনগণের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার জন্য জোর দাবি ও অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় নোটিশ গ্রহীতাগনের বিরুদ্ধে আইন পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে বাধ্য হবো।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এইচআই