Wednesday 16 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৭ মার্চ দিবস বাতিল হলে রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি

আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৬ অক্টোবর ২০২৪ ২১:২২

ঢকা : ঐতিহাসিক ৭ মার্চসহ আটটি দিবস বাতিল করার সিন্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে দেশের বামধারার রাজনীতিবিদ ও সংবিধান প্রণেতার সদস্যরা তাদের পৃথক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, অন্য দিবসগুলো যাইহোক না কেন ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বাতিল করলে সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এসব কার্যক্রম থেকে সরকারের সরে আসা উচিৎ। সরকারের কাজ নির্বাচন কমিশন সংস্কার করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ প্রশাসনসহ সিভিল প্রশাসন ঢেলে সাজানো। বাংলাদেশ সৃষ্টির ঐতিহাসিক দিবসে হস্তক্ষেপ করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শক্তভাবে রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।

বিজ্ঞাপন

সরকার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মদিন, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতী শোক দিবস, ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস, ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস, ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস বাতিল করার সিন্ধান্ত নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

দিবস বাতিলের বিষয় সংবিধান প্রণয়নের সদস্য অধ্যাপক আবু সাঈদ বলেন, সংবিধানের তফসিল অর্ন্তভুক্ত যেসব দিবস আছে সেসব দিবস বাতিল করার সিন্ধান্ত জঘন্য অপরাধ। ইতিহাস মুছে ফেলা যায়না। ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করেনা।

কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার সাথে সম্পৃক্ত ঐতিহাসিক ঘটনার যেসব দিবস রয়েছে তা বাতিলের পক্ষে আমরা নই।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ক্ষমতায় বসেছে নির্বাচন কমিশন সংস্কার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও কালো আইন বাতিল, মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে। এসব কাজ না করে মুক্তি যুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো বাদ দেওয়ার সিন্ধান্ত নিয়ে বাতিল করলে সরকার প্রশ্ন বিদ্ধ হবে। সরকার অহেতুক এসব বির্তক সৃষ্টি করে কোন লাভ করতে পারবে না। বরং কলংকিত হবে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে দিবসগুলো বাতিলের সিন্ধান্ত এসেছে। ৭ই মার্চ আমরাও পালন করেছি। কিন্তু আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে দেশের জনগণ ক্ষুব্ধ। জনগণের সেন্টিমেন্ট ও আওয়ামী দুঃশাসনের পরিস্থিতির ফসলের শিকার হয়েছে ৭ ই মার্চ।’

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কর্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘অধিকাংশ দিবস জাতীয় দিবস করা হয়েছে। তা আমরা জানতাম না। তবে ৭ মার্চ বাতিল করার জন্য সরকার যে সিন্ধান্ত নিয়েছে তা ঠিক করেনি। ৭ই মার্চের ভাষণ স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য শেখ মুজিবুর রহমান জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। সরকারকে এই সিন্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ করবে।’

বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ স্বধীনতা যুদ্ধের মাইলস্টোন। ৭ মার্চ বাতিলের সিন্ধান্ত দুঃখ জনক। সরকারের এই সিন্ধান্ত দেশও জাতীর জন্য অমঙ্গল হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বিএনপি দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছে। এই প্রতিহিংসার কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত ঐতিহাসিক দিবসগুলো বাতিলের সিন্ধান্ত দেশের জনগণ মেনে নিবেনা। বাম গণতান্ত্রিক জোট এ বিষয় শিগগিরই রাজপথে নামবে।

রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বায়ক আ্যডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ আওয়ামী লীগের নয়। ৭ই মার্চ দেশ ও জাতির। সরকার ৭ই মার্চ বাতিলের সিন্ধান্ত নিয়ে ভুল করেছে। বর্তমান সরকারের ঐতিহাসিক দিবস বাতিল করার কাজ নয়। তারা যে কাজের জন্য আসছে সেটাই তারা করবে বলে আশাকরি।’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ‘৭ মার্চ বিশেষ একটি দিবস তা আমরা মনে করিনা। ৭ মার্চের আগেও ২ মাচ জাতীয় পতাকা এবং ৩ মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার ঘটনা গুরুত্বপূর্ণ। এসব ঘটনার সঙ্গে ৭ মার্চ সম্পৃক্ত। একই সুতায় বাধা। ফলে আমরা ২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করবো। আর ওইসব দিবস পালন করতে সময়ের এবং দেশের ক্ষতি।’

নুরু আরো বলেন, ‘জাতীয় জীবনে সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দিন ছাড়া বাকি দিবস বাতিল করার জন্য সরকার যে সিন্ধান্ত নিয়েছে সে সিন্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ব্যাবহার করে একদলীয় শাসন কয়েম করেছিল। ওই সময় সরকার পারিবারিক সদস্যদের জন্মদিনও দিবস হিসেবে পালন করার সিন্ধান্ত নেয়।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এসআর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর