Thursday 17 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নির্বাহী কমিটির সকলকে পদত্যাগের দাবি বেসিস সংস্কার পরিষদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৫৭

ঢাকা: বেসিসের বর্তমান নির্বাহী কমিটির সকলকে সম্মানের সঙ্গে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বেসিস সংস্কার পরিষদ। একই সঙ্গে বেসিসকে দূর্নীতিমুক্ত করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তোফাজ্জাল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বেসিস সংস্কার পরিষদের মুখপাত্র নিগার সুলতানা বলেন, বেসিস সংস্কার নাম দিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে। দূর্নীতিমুক্ত করে একটি সচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে পর্যায়ক্রমে আমরা সামনে এগিয়ে যাব। বর্তমান কমিটির বিভিন্ন পদে যারা রয়েছেন তারা যদি নিজনিজ পদ থেকে পদত্যাগ না করেন তা হলে বেসিস সংস্কার পরিষদ পর্যায়ক্রমে কঠোর আন্দোলনে যাবে। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারক লিপি প্রদান, অবস্থান ধর্মঘট ইত্যাদি। তবে এই মূহুর্তে পরিকল্পনার কথা প্রচার করতে চাই না।

বেসিস সংস্কার কেন চায় তারা সে সর্ম্পকে নিগার সুলতানা বলেন, বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ দেশের টাকা বিদেশে পাঠাতে সহায়তা করেছে। সাবেক সরকারকে সহায়তা করেছে। এমনকি ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় তারা ছাত্রদের ওপর হামলা গুলিবর্ষন করার জন্য ইন্ধন দিয়েছে। অনেকে আন্দোলনে অংশগ্রহন করেছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বেসিসের বর্তমান এক্সিকিউটিভ কমিটির (ইসি) অনেক সদস্যের দুর্নীতি ও অপকর্মের সংবাদ মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে অনেকবার প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলে সক্রিয় রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, বিগত বছরগুলোতে বিতর্কিত বেসিস নির্বাচনে সবকটি প্যানেলই সজীব ওয়াজেদ জয়, সালমান এফ রহমান ও জুনায়েদ আহমেদ পলকের ইচ্ছানুসারে নির্বাচন হয়েছে। এমনকি অনৈতিকভাবে নির্বাচনে জিততে তারা নির্বাচনের আগে প্রক্সি ভোটার তৈরি করার পাশাপাশি বৈধ সদস্যদের ভোটার হতে বাধা দিয়েছে নজীরবিহীন উপায়ে। ফলে ২ হাজার ৬০০ সদস্যের বেসিসে সর্বোচ্চ ৯০০ জন ভোটার হতে পেরেছিল। ভিন্নমতের সদস্যদের ভোট থেকে বিরত রাখতেই ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়।

এছাড়াও নিগার সুলতানা অভিযোগ করেন, এসব নির্বাচনে প্রায় সকল প্যানেলই সরকারের মদদপুষ্ট ছিল, যারা বিভিন্ন পার্টি ও ইভেন্টের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে, যা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। দুর্নীতি ঢাকতে নির্বাচনের আগে অবৈধ পন্থায় অডিটর বদল করা হয়েছে। এমনকি বেসিসের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ থেকে অভিযোগ মুছে দেওয়া, ক্লোজড গ্রুপে পোষ্ট এপ্রুভাল সিস্টেম চালু করা এবং সমালোচনামুলক পোষ্ট এপ্রুভ না করা/দেরী করার অভিযোগ আছে। নির্বাহী কমিটি-র বাইরে বেসিস টাফদেরকে দিয়ে এসব অপকর্ম করানোর অভিযোগও আছে, যা সদস্যদের জন্য অসম্মানজনক।

সংবাদ সম্মেলনে বেসিস সংস্কার পরিষদের ৮ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে

১। বর্তমান নির্বাহী কমিটির সকলকে পদত্যাগ করতে হবে।

২। নিরপেক্ষভাবে বর্তমান সদস্যদের যোগ্যতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা পূর্বক ভূয়া/প্রক্সি সদস্যদের সদস্যপদ বাতিল করতে হবে।

৩। বিগত বছরগুলোতে যে সকল সদস্য ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারনে সদস্যপদ নবায়ন করতে পারেননি তাদের ব্যবসায় ফিরে আসতে সার্বিক সহায়তা করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

৪। প্রেসিডেন্টস ফোরাম নামক স্বেচ্ছাচারী প্ল্যাটফর্মের অবসান করতে হবে।

৫। বেসিস গঠনতন্ত্র পুনর্গঠন করে এতে বিদ্যমান সুস্পষ্ট বৈষম্য দুর করতে হবে। যেমন, একটি ক্যাটেগরিতে ৩ জন থেকে ১ জন পরিচালক যা সুস্পষ্ট বৈষম্য।

৬।একটি নিরপেক্ষ সংস্কার কমিটির মাধ্যমে প্রকৃত সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বেসিসের বিদ্যমান সমস্যাগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে নতুন গঠণতন্ত্র প্রনয়ণ করতে হবে।

৭। ছাত্রদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে পাওয়া নতুন বাংলাদেশে ছাত্র-তরুনদের গুরুত্ব দিতে বেসিসের বর্তমান স্টুডেন্ট বডিকে প্রকৃত অর্থে সক্রিয় করতে হবে, যেন তারা উদ্যোক্তা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে বা প্রযুক্তিবিদ হিসাবে এই শিল্পে নেতৃত্ব দিতে পারে।

৮। ইসি সদস্যদের একমাত্র কাজ সদস্যদের স্বার্থ দেখা, ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য কারো পক্ষে কাজ করা নয়। সংশোধিত গঠনতন্ত্রে এটি নিশ্চিত করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কেন আমরা বেসিস সংস্কার চাচ্ছি, কারন হচ্ছে বিগত ১৬টি বছর ধরে সজীব ওয়াজেদ জয়, সালমান এফ রহমান, জুনায়েদ আহমেদ পলক ও আনিসুল হক গং তথাকথিত ডিজিটাল বাংলাদেশ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানের নামে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি ও অপচয় সংঘটিত করেছে যার সাথে এই সময়কালের বেসিস বোর্ডের নেতারা ও তাদের প্রক্সি কোম্পানিগুলো সরাসরি জড়িত।

এই প্রেক্ষিতে বেসিসের সদস্যদের বড় একটি অংশ মনে করছে নতুন বাংলাদেশে আমাদের সামনে যে সুযোগ এসেছে। যার প্রতিফলন দেশের সর্বত্র দেখা যাচ্ছে। সে অনুসারে তথ্যপ্রযুক্তির শীর্ষ এই ট্রেড বডিতেও পরিবর্তন আসুক। সে পরিবর্তন সম্ভব বর্তমান ইসির সম্পূর্ন পদত্যাগ ও একটি নিরপেক্ষ সংস্কার কমিটি গঠনের মাধ্যমে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পরিষদের মুখপাত্র ফৌজিয়া নিগার সুলতানা। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জুলহাস মিয়া, মিজানুর রহমান, রক মনুর জামান রনি।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমপি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘রিসেট’ হোক সকলের ভাষা-পরিভাষা
১৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৫২

সম্পর্কিত খবর