পানির সংকটে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন হুমকির মুখে
১৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:১০
পানির সংকটে আগামী ২৫ বছরের মধ্যে খাদ্য উৎপাদন নিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব। গ্লোবাল কমিশন অন দ্য ইকোনমিকস অব ওয়াটারের এক প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের বসবাস এবং অর্ধেকেরও বেশি খাদ্য উৎপাদন এমন এলাকা ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে, যেখানে পানির মজুত কমতির দিকে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) গ্লোবাল কমিশন অন দ্য ইকোনমিকস অব ওয়াটারের ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠী এরই মধ্যে পানির সংকটের মধ্যে রয়েছে। জলবায়ু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সংকট আরও বাড়বে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক বৃষ্টিপাতের ধরনে পরিবর্তন এসেছে। সেই সঙ্গে তাপমাত্রার বৃদ্ধি এবং পানির মুজুত কমে যাওয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে। পানিচক্রের এমন প্রবণতার ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কেবল পানির সংকটের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গড়ে ৮ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। নিম্ন আয়ের দেশগুলোর ক্ষেত্রে এই প্রভাব হবে আরও ভয়াবহ। এসব দেশে জিডিপি কমে যেতে পারে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত।
জিসিইডব্লিউর প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, জল-নিবিড় খাতে ক্ষতিকর ভর্তুকি হয় বাদ দিতে হবে, না হয় তা জল সংরক্ষণের কাজে লাগাতে হবে। দরিদ্র ও দুর্বলদের জন্য নির্ধারিত সহায়তা দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক ও গ্লোবাল কমিশন অন দ্য ইকোনমিকস অব ওয়াটারের কো-চেয়ার এনগোজি ওকোনজো-আইওয়ালা বলেন, ‘আমাদের উপযুক্ত ভর্তুকি দিয়ে পানির মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।’
গ্লোবাল কমিশন অন দ্য ইকোনমিকস অব ওয়াটারের আরেক কো-চেয়ার সিঙ্গাপুরের প্রেসিডেন্ট থারমান শানমুগারত্নম পানি সমস্যাকে একটি সংকট হিসাবে দেখার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে এই সংকট সমাধানের জন্য উদ্ভাবন ও বিনিয়োগ প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
পানিকে সাধারণত প্রকৃতির এক অফুরন্ত উপহার হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। কিন্তু সেই পানির পরিবহণ প্রক্রিয়া জটিল ও ব্যয়বহুল। তাই পানির সংকট মোকাবিলায় এখনই সবাইকে সতর্ক হয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
সারাবাংলা/এইচআই/টিআর