এসকে ট্রিমসের সঙ্গে এনবিআর কর্মকর্তা মতিউরের সম্পর্ক নেই
১৭ অক্টোবর ২০২৪ ২০:০৩
ঢাকা : পুঁজি বাজারে তালিকাভুক্ত শতভাগ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের এলসি বন্ধ থাকায় বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের মালিকানা রয়েছে এমন অপ্রচারের শিকার হওয়ায় দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কোম্পানিটির ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেছিল।
এতে করে কোম্পানিটির দেড় হাজার শ্রমিক, কয়েক হাজার বিনিয়োগকারী এবং কোম্পানির উদ্যেক্তারা বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে ব্যাংক লেনদেন বন্ধ করায় প্রতিষ্ঠানটির এলসি বন্ধ হয়। এরই ধারাবাহিকতায় কারখানার উৎপাদনও বন্ধ হয়ে যায় এবং বিদেশীদের ক্রয়াদেশ বাতিল হয়। যার ফলে কোম্পানির প্রায় ৯৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়। অথচ এসকে ট্রিমসে মতিউর রহমান এবং তার পরিবারের কেউ পর্ষদে নেই এবং তাদের মালিকানাও নেই।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) এসকে ট্রিমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ কাইয়ুম হাওলাদার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘এসকে ট্রিমসের শেয়ারহোল্ডার ৬৭৯৩ জন। কোম্পানিটি শতভাগ রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এ কোম্পানিতে এনবিআর এর সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও তার পরিবারের মালিকানা রয়েছে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে। যার জন্য কোম্পানিটির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। এই কারণে ক্রয়াদেশ বাতিল ও কারখানা বন্ধ করায় লোকসানে পড়েছে ৬ হাজার ৭৯৩ জন শেয়ারহোল্ডার।’
তিনি বলেন, ‘গত ২৫ জুন এসকে ট্রিমসের ওয়ান ব্যাংকে পরিচালনা করা হিসাব এবং ১১ জুলাই ৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা হয়। যাতে কয়েক হাজার বিনিয়োগকারীর এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের উৎপাদন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ। গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে এটি কার্যকরও করা হয়। তবে এরপরে উচ্চ-আদালত ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। ফলে ব্যাংক হিসাব চালু হয়েছে। এরপর ২১ সেপ্টেম্বর কারখানার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংক হিসাব জব্দ ও ক্রয়াদেশ বাতিলকে কেন্দ্র করে এসকে ট্রিমসের শেয়ারহোল্ডারদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। যা এখনো চলমান। তবে ব্যাংক লেনদেন ঠিকমতো চালু থাকলে আগামী এক বছরের মধ্যে কারখানাটি পুরোপুরিভাবে ঘুরে দাড়াবে এবং লাভজনক অবস্থানে ফিরবে। এই ব্যাপারে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক ও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা তথা সরকারের সহযোগীতা কামনা করছি।’
জানা গেছে, গত ১১ জুলাই এস কে ট্রিমসের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার খবরে শেয়ারের পতন শুরু হয়।
গত ১১ জুলাই এসকে ট্রিমসের শেয়ার দর ছিল ২৫.৫০ টাকা। যে শেয়ারটি এখন ১৪.৩০ টাকায় নেমে এসেছে। অর্থাৎ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার খবর প্রকাশের পরে প্রতিটি শেয়ারের দর কমেছে ১১.২০ টাকা বা ৪৪ শতাংশ। এক্ষেত্রে কোম্পানিটির সব শেয়ারের দর কমে নেমেছে ৯৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকায়।
উল্লেখ্য, গত ৯ সেপ্টম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্দেশনায় বলা হয়, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ২৩ (১) (গ) ধারা অনুযায়ী, বাংলাদেশে কর্তব্যরত সকল তফসিলি ব্যাংকগুলোকে মানি লন্ডারিং অপরাধ সন্দেহে কতিপয় ব্যক্তি ও একক ব্যক্তি মালিকানাধীন হিসাবে লেনদেন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/জিএস/এসডব্লিউআর