Saturday 19 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে তেল মেরে সুবিধা নিতো’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:০৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বহুল আলোচিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নকারী সাংবাদিকদের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী।

তিনি বলেন, কারা ফ্যাসিবাদের দালাল, তা আমরা জানি। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে গিয়ে শুধু প্রশংসা করতো, অথচ কোনো প্রশ্ন করতো না। তেল মেরে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিতো। মনে হতো সংবাদ সম্মেলন যেন প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান!

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত ‘গণমাধ্যম ও ফ্যাসিবাদ উত্তর বাংলাদেশ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের গণি চৌধুরী বলেন, ‘দেশ থেকে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে গেলেও ফ্যাসিবাদের মূল এখনও রয়ে গেছে। যদি এটিকে চূড়ান্তভাবে নির্মূল করতে না পারি তাহলে আমাদের লক্ষ্য অর্জন হবে না। কারণ ফ্যাসিবাদকে সুযোগ দেওয়া মানে শত শহিদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা। আমরা জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ভুলে যাইনি। আন্দোলনে নিরীহ শিক্ষার্থীদের পাখির মতো হত্যা করেছে। যারা ফ্যাসিবাদের দালাল, তাদের সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না।’

দেশে ‘বগলদাবা’ সাংবাদিক-সম্পাদকের অভাব নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজেদের নিয়ে কথা বলতে হবে। আমরা সংবাদমাধ্যম হতে পেরেছি, কিন্তু গণমাধ্যম হতে পারিনি। এখন বগলদাবা সাংবাদিক, সম্পাদকের অভাব নেই। তারা আমাদের সাংবাদিকদের মান-মর্যাদা নষ্ট করেছে। তারা ফ্যাসিবাদীদের কাছ থেকে সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। একজন সৎ সাংবাদিক কখনো ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আপস করে না, কখনো খামের জন্য অপেক্ষা করে না।’

বিজ্ঞাপন

‘আমরা (সাংবাদিকরা) কি সমাজের অতন্দ্র প্রহরী হতে পেরেছি? আমরা সাংবাদিকতা নয়, চাটুকারিতাই করেছি। তাই তো ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে কাউকে কাউকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। আমাদের ভুলগুলো বলতে হবে। আজ সময় এসেছে সৎ সাংবাদিকতা ফিরিয়ে আনার, ফ্যাসিবাদ যেখানে আসবে সেখানেই প্রতিবাদ করার। সাংবাদিকতাকে লাথি মেরে আমরা দলদাস হয়ে গেছি। হলুদ সাংবাদিকতা, তথ্যসন্ত্রাস সঠিক সাংবাদিকতাকে ম্লান করে দিচ্ছে।’

সাগর-রুনি হত্যার বিচার না হওয়ার জন্য দায়ী বিশ্বাসঘাতকদের বিচারের আওতায় আনা হবে জানিয়ে কাদের গণি বলেন, ‘দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা এবং প্রথিতযশা সাংবাদিক শফিক রেহমানের ওপর নির্যাতন নিয়ে তৎকালীন সময়ে কোনো মিডিয়া তেমন ভূমিকা রাখেনি।’

সভায় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বোর্ড সদস্য জাহেদুল করিম কচি বলেন, ‘বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা পেয়েছে। বিগত সরকার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধাচরণ করেছে। যেসব সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাদের পুর্নবাসন করার দাবি জানাই। চট্টগ্রামের প্রশাসনে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা যারা রয়েছে, অবিলম্বে তাদের অপসারণ চাই।’

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিএমইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমানের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন- দৈনিক কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, প্রবীণ সাংবাদিক মাঈনুদ্দীন কাদেরী শওকত, একাত্তর টিভির ব্যুরো প্রধান সাইফুল ইসলাম শিল্পী, দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম সেলিম, দৈনিক দিনকালের ব্যুরো প্রধান হাসান মুকুল, সিনিয়র সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, মাহবুব রশিদ, কামরুল হুদা, ওয়াহিদ জামান, এস এ টিভির ব্যুরো প্রধান সোহাগ কুমার বিশ্বাস, দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরো প্রধান নুরুল আলম মিন্টু, বাসস’র বিশেষ প্রতিনিধি মিয়া মোহাম্মদ আরিফ, সাংবাদিক শাহ নেওয়াজ রিটন, যুগান্তরের নিজস্ব প্রতিবেদক মজুমদার নাজিম উদ্দীন।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম