সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ না করার দাবি
১৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:২৬
ঢাকা : দেশের অন্যতম পর্যটক বিনোদন কেন্দ্র সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক সীমিত ও রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ না করার দাবি জানিয়েছে পর্যটন শিল্পের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। এটি দেশের অন্যতম আকষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক এ দ্বীপে ভ্রমণ ও রাতে অবস্থান করে সৌন্দর্য উপভোগ করেন। এখানে পর্যটক সীমিত ও রাত্রিযপন নিষিদ্ধ না করে পর্যটন শিল্পকে চলমান রেখে প্রয়োজনীয় সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে দাবি জানানো হয়।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টর্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিতেএক সংবাদ সম্মেলনে এসব দবি জানানো হয়। এতে বলা হয়, হাজার হাজার মানুষের জীবন, জীবিকা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উন্নয়নমুখী জীবনধারণ অব্যাহত রাখতে পর্যটন শিল্পকে চলমান রাখা প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টোয়াব সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান, সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোটের চেয়ারম্যান শিবলুল আজম কোরেশী। এছাড়াও ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার, ই-ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, সেন্টমার্টিন দোকান মালিক সমিতি, সেন্ট মার্টিন হেটেল মালিক সমিতি ও জাহাজ মালিক সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে টোয়াব সভাপতি রাফেউজ্জামান বলেন, ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের সঙ্গে দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় পরিবেশবান্ধব পানির বোতল ও পানিরপাত্র সরবরাহের ব্যবস্থা করা, পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাস্টবিন এবং ময়লা ডাম্পিংয়ের স্থান নির্ধারণসহ সেন্টমার্টিনকে কুকুরমুক্ত করতে হবে। কারণ কুকুর কচ্ছপের ডিম খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে।’
নিতি বলেন, দ্বীপের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। যে নীতিমালা অনুযায়ী পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দিতে হবে। আর আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলেই এই দ্বীপ, সেখানকার অধিবাসী এবং সংশ্লিষ্ট সবার উত্তরোত্তর উন্নয়ন ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, ‘পৃথিবীর অন্যতম সেনসেটিভ দ্বীপ মালদ্বীপ, মরিসাস, ইন্দোনেমিযায় হাজার হাজার দ্বীপ রয়েছে। সেখানে পর্যটকদের রাত্রিযাপনের কোন বিধি নিষেধ নেই। সেন্টমার্টিনের ক্ষেত্রে তা করা হলে এটি হবে পর্যটন শিল্পের জন্য আত্নঘাতি সিদ্ধান্ত।
পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের গভর্নিং বডির সদস্য শিবলুল আজম কোরেশী বলেন, ‘টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের উপযুক্ত পথ নির্ধারণ করে লাখো মানুষের জীবন-জীবিকা বাঁচিয়ে রাখতে হবে। দ্বীপে প্লাস্টিকমুক্ত এলাকা বাস্তবায়ন অথবা দ্বীপের প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইক্লিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিতে হবে।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিষয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বীপবাসী এবং সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। সেন্টমার্টিনে পরিবেশবান্ধব বোতলজাত পানির কারখানা স্থাপন অথবা পরিবেশবান্ধব পানির বোতল পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশে-বিদেশে প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে আরও মনোযোগী হতে হবে। তাহলে কক্সবাজারের পাশাপাশি এই দ্বীপ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য একটি দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠবে। এছাড়াও দ্বীপে উচ্চস্বরে সাউন্ডবক্স বাজানো বন্ধ ও রিসোর্টগুলোতে সন্ধ্যা ৭টা থেকে আলো সীমিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি সেন্টমার্টিন দ্বীপকে আগামী ৫ বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশবান্ধব পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
সারাবাংলা/জিএস/এসআর