Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাত্র আন্দোলনের ‘বিরোধিতাকারী’ হলে, পরীক্ষা বর্জন সহপাঠীদের

চবি করেসপন্ডেন্ট
২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৫১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে হলে উপস্থিত দেখে পরীক্ষা বর্জন করেছেন তার সহপাঠীরা। তারা চবির বাংলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সহপাঠীরা বলছেন, ওই শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন। তাকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হলে তারা পরীক্ষা দেবেন না। শিক্ষার্থীদের আপত্তির মুখে ওই পরীক্ষা আর নেওয়া হয়নি।

রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নী যথারীতি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য হলে তার নির্ধারিত আসনে বসেছিলেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে মৌখিকভাবে আপত্তি তোলেন। এর মধ্যে অন্যরাও এ আপত্তিতে সম্মতি জানান।

মুন্নী যেন পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারেন, সে জন্য তার সহপাঠীরা প্রক্টরে কার্যালয়ে গিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। এতে বলা হয়, মুন্নীকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিলে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের কোনো শিক্ষার্থী সমাগত পরীক্ষায় অংশ নেবে না।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অনলাইনে বিভিন্ন নেতিবাচক পোস্ট-কমেন্ট করেছিলেন মুন্নী। আন্দোলনের সময় তাকে বিভাগ থেকে বয়কট করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। ওই বিভাগে মুন্নীর মতো আরও কয়েকজন আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। পরে তারা ক্ষমা চাইলে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে যায়। কিন্তু মুন্নী ক্ষমা চেয়ে অনুতপ্ত না হয়ে বরং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন— এমনটিই অভিযোগ তার সহপাঠীদের।

বিজ্ঞাপন

বাংলা বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহিম সারাবাংলাকে বলেন, “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় মুন্নী ছাত্রদের বিরুদ্ধে ছিল। এ ছাড়াও সে ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট করে বলেছিল, ‘কোটা আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম, এখন যেটা চাচ্ছেন সেটার পক্ষে নেই।’ বিভাগের আরও কয়েকজন এমন করলেও পরে তারা ক্ষমা চেয়েছে। কিন্তু মুন্নী ক্ষমা চায়নি। আমরা তাকে নিয়ে পরীক্ষায় বসতে রাজি না। তাই আমরা সবাই পরীক্ষা বয়কট করেছি।”

জানতে চাইলে জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই কোটা আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। এমনকি আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে আহতও হয়েছি। হাইকোর্ট কোটার বিষয়ে রায় দিলে আমি আন্দোলন থেকে সরে যাই। আমার একটি পোস্টের কারণে আমাকে বিভাগ থেকে বয়কট করে। আজ আমি পরীক্ষা দিতে গেলে অন্যরা হল থেকে বের হয়ে যায়।’

‘আমি পরীক্ষা দিতে চাই। আমি তো কোনো অপরাধ (ক্রাইম) করিনি। শিক্ষকদের কাছে আমি সবকিছু বলেছি। তারা আমাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। বিভাগ থেকে লিখিত আকারে যদি আমাকে পরীক্ষা দিতে নিষেধ করে, সেটা আমি গ্রহণ করব,’— বলেন মুন্নী।

চবি বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তাসলিমা বেগম বলেন, ‘মুন্নী পরীক্ষা দিতে আসায় অন্যরা পরীক্ষা দেয়নি। তারা প্রক্টর অফিসে এ সম্পর্কে একটা লিখিত বক্তব্য পাঠিয়েছে। আমরা পরশু (মঙ্গলবার) এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’

সারাবাংলা/এমআর/টিআর

চবি বাংলা বিভাগ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর