চবিতে শিক্ষার্থী-গ্রামবাসী বিরোধ, হামলায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ-যুবলীগ
২১ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৫১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয়দের হামলায় অন্তত তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত।
এ ঘটনার পর সোমবার (২১ অক্টোবর) সকাল শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন। শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা করতে পারে, এ আশঙ্কায় গ্রামবাসী সড়কে ব্যারিকেড দেয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
চবি প্রশাসন বলছে, একটি দোকান নিয়ে বিরোধের জেরে গ্রামবাসীদের মধ্যে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু একটি পক্ষ গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করে।
জানা গেছে, গতকাল রোববার (২০ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলগেট এলাকায় আপ্যায়ন নামে একটি রেস্তোরাঁয় হামলা হয়। হামলাকারীরা আশপাশের আরও কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করেন। এ সময় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে গ্রামবাসী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্থানীয় যুবলীগ নেতা হানিফের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা দোকানপাটে হামলা চালায় ও গুলিবর্ষণ করে।
ভোরের দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দলে দলে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে জড়ো হন। তারা মিছিল নিয়ে রেলগেট এলাকায় যান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হামলাকারীদের একটি দোকান ভাঙচুর করে। তখন স্থানীয় লোকজন প্রতিরোধের চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের মধ্যে কিছুক্ষণ ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও মারামারি হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, দোকানে হামলাকারীরা গ্রামের লোকজন নিয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তিন ছাত্র আহত হয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা পরবর্তী সময়ে জিরো পয়েন্ট এলাকায় ও ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে সকাল ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে গ্রামবাসীও সংঘবদ্ধ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের অদূরে সড়কে ব্যারিকেড দেয়। পরে চবি প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গ্রামবাসীকে শান্ত করে ব্যারিকেড তুলে নেন। একইভাবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদেরও শান্ত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানবীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের কোনো সমস্যা হয়নি। রেলওয়ের জায়গায় নির্মিত একটি দোকান দখলকে কেন্দ্র করে দোকান মালিক শাহীনের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে।’
‘তবে এ ঘটনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা বলে গুজব ছড়িয়েছে কোনো একটি পক্ষ। আবার আরেকপক্ষ গুজব ছড়িয়েছে, শিক্ষার্থীরা স্থানীয়দের ওপর হামলা করতে আসছে। গুজব শুনে স্থানীয়রা এক নম্বর সড়কে ব্যারিকেড দেয়। আমরা দুপক্ষের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি নিরসন করেছি,’— বলেন চবি প্রক্টর অধ্যাপক তানবীর।
সারাবাংলা/এমআর/টিআর