বহিরাগতদের ইজারা, সাম্পান বন্ধ রেখে মাঝিদের প্রতিবাদ
২১ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:০১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বহিরাগতদের ঘাট পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ায় কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটে বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছেন সাম্পান মাঝিরা। এতে যাত্রী পারাপার বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত একাধিক সংগঠন এ কর্মসূচি পালন করছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে অভয়মিত্র ঘাটের খাস কালেকশনের জন্য প্রতিষ্ঠানের এস্টেট শাখার বাজার পরিদর্শক দূর্বাদল চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ওই আদেশে সোমবার থেকে অভয়মিত্র ঘাটে যাত্রী পারাপারে নৌকা, সাম্পান সরবরাহসহ অন্যান্য সহযোগিতার জন্য আবু নাসের সাজ্জাদ ও আব্দুল কাদের ফিরোজ নামে দুইজনকে সাময়িকভাবে নিয়োজিত করা হয়। তারা ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ড বিএনপির নেতা বলে জানা গেছে। এরপরই বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা দেন কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন।
ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীতে আমাদের পূর্বপুরুষ সাম্পান চালিয়েছে। এরপর আমরা চালাচ্ছি। এটা পরিচালনা করার দায়িত্ব আমাদের। এটা আমাদের অধিকার। আমরা হাইকোর্ট থেকে রায় এনেছি। আমরা থাকা অবস্থায় এ ঘাটগুলোকে অন্য কারও হতে পরিচালিত হতে দেব না।’
নৌকায় নদী পার হতে আসা মো. শফিক নামে একজন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন যাওয়া-আসা করি। এখন নৌকা না চলায় বিপদে পড়েছি। সড়কপথে যেতে হলে চারটি গাড়ি পরিবর্তন করতে হবে। টাকার পাশাপাশি সময়ক্ষেপণও বেশি হয়।’
মো. সোহাগ নামে আরেকজন বলেন, ‘এখানে আসার পর শুনছি নৌকা চলবে না। আগে থেকে কোনো নোটিশও পাইনি। এদিকে গেলে খুব কম সময়েই যাওয়া-আসা করা যায়। সহজ পথ ছিল। এখন অনেক দূর ঘুরে যেতে হবে গন্তব্যে।’
চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাঝিরা তাদের অধিকার চায়। তারা নৌকা চালায়। মাঝিরাও এদেশের নাগরিক, আবার যারা ইজারা দিয়েছেন এবং নিয়েছেন তারাও নাগরিক। কিন্তু তারা নৌকা সংক্রান্ত বিষয়গুলো বুঝবে না। তাই মাঝিদের এ সমস্ত দায়িত্ব দিতে হবে। এটা তাদের ন্যায্য দাবি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি তা না হয় তাহলে তারা তাদের পেশা হারাবে। সিটি কর্পোরেশনের ওই কর্মকর্তা যিনি ইজারা দিয়েছেন বা যিনি নিয়েছেন তারা কি কোনোদিন বৈঠা দিয়ে নৌকা চালিয়েছেন? ঘাটেও তো কখনও আসেননি বলে আমার মনে হয়। তাই যারা এসব পারে তাদের হাতেই এসব দায়িত্ব দিতে হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপ-সচিব) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও রাজস্ব কর্মকর্তা সাব্বির রহমান সানির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা কল ধরেননি।
সারাবাংলা/আইসি/এইচআই