Monday 21 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে বিতর্ক না তৈরির আহ্বান রাষ্ট্রপতির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৫৭

ঢাকা: ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়ার আগে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন কি না— তা নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। গণমাধ্যমে খবর এসেছে, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিলেও রাষ্ট্রপতি নাকি সে পদত্যাগপত্র পাননি। তার এমন বক্তব্যকে মিথ্যাচার ও শপথভঙ্গের সামিল বলে অভিহিত করেছেন আইন উপদেষ্টা।

এমন তীব্র বিতর্কের মুখে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মুখ খুলেছেন। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুটি মীমাংসিত। এ নিয়ে যেন কেউ কোনো বিতর্ক তৈরি না করে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রেসউইং থেকে গণমাধ্যমে এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতির উপপ্রেস সচিব মুহা. শিপলু জামান বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন।

আরও পড়ুন- ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মিথ্যাচার করছেন’

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ইস্যুতে রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে প্রচারণা চালানো হয়েছে তা জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে— ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার ওপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে সেগুলোর যাবতীয় উত্তর স্পেশাল রেফারেন্স নম্বর-০১/২০২৪-এ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গত ৮ আগস্টের আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতির ৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের মতামত চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ এ মতামত দিয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে কোনো বিতর্ক তৈরি বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিব্রত না করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মীমাংসিত এ বিষয়ে নতুন করে কোনো বিতর্ক তৈরি করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল কিংবা বিব্রত করা থেকে বিরত থাকার জন্য রাষ্ট্রপতি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এর আগে দৈনিক মানবজমিনের ম্যাগাজিন পত্রিকায় প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর এক প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেখানে রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে মতিউর রহমান লিখেছেন, রাষ্ট্রপতি নিজে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি বা দেখেননি। আবার মন্ত্রিপরিষদ সচিবও রাষ্ট্রপতির কাছে সেই পদত্যাগপত্র চেয়েছিলেন। অর্থাৎ সরকারের কাছেও পদত্যাগপত্রটি নেই। ফলে শেখ হাসিনা আদৌ পদত্যাগ করেছিলেন কি না, তা নিয়ে ধূম্রজাল তৈরি হয়।

এর আগে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জনগণের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রথম জানান, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। পরে রাষ্ট্রপতিও জনগণের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে একই তথ্য জানান। রাষ্ট্রপতি এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ চাইলে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পক্ষে মত দেন।

ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রটির কোনো অনুলিপি কোথাও পাওয়া যায়নি। একবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পদত্যাগপত্র ছড়িয়ে পড়লেও পরে জানা যায়, সেটি ছিল ভুয়া। ফলে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রটি নিয়ে প্রশ্ন অনেকের মনেই থেকে গিয়েছিল।

এর মধ্যে মতিউর রহমান চৌধুরীর ওই প্রতিবেদন ব্যাপক আলোচনা তৈরি করলে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সোমবার সচিবালয়ে বলেন, রাষ্ট্রপতি নিজে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার কথা বলেছিলেন। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন বলেই তিনি সংসদ ভেঙে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছিলেন উল্লেখ করেই তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়ে মতামত চেয়েছিলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, রাষ্ট্রপতি দৈনিক মানবজমিনের সম্পাদকের কাছে এখন এসে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি দাবি করে থাকলে তিনি মিথ্যাচার করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি শপথভঙ্গের মতো গুরুতর অপরাধ করেছেন। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি পদে থাকার নৈতিক অধিকার রয়েছে কি না, সে প্রশ্নও তোলেন আইন উপদেষ্টা।

সারাবাংলা/টিআর

পদত্যাগ মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি শেখ হাসিনা শেখ হাসিনার পদত্যাগ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ফটোসাংবাদিক শোয়েব মিথুন আর নেই
২১ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০৭

সম্পর্কিত খবর