Monday 21 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ধর্ষণ সংক্রান্ত আইন সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২৪ ২১:১২

ঢাবি: রাজধানীর বনানীতে নয় বছরের শিশু ধর্ষণসহ সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সকল ধর্ষণের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত এবং ধর্ষণ সংক্রান্ত আইন সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।

সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা। সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তব্যের পাশাপাশি ধর্ষণবিরোধী চিত্রাংকন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী কাজী রুবাইয়া রাহাত মাটি। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নূমান আহমেদ চৌধুরী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাহনুম আহমেদ নিরেট বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনার পর কেন আমাদের বিচার চাইতে দাঁড়াতে হবে? আমরা কেন বিচার পাই না? রাষ্ট্র কেন ব্যর্থ? নয় বছরের শিশুটির ঘটনা ১২ অক্টোবর ঘটেছে। কিন্তু আজকে ২১ অক্টোবর, পুলিশ সেই চল্লিশ-বিয়াল্লিশ বছরের লোকটার কোনো ঠিকানাই এখনও খুঁজে বের করতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাষ্ট্র ও জনগণের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। আমি যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সাহায্য চাচ্ছি তারা সাহায্য করতে পারছে না। তাহলে এদেশে আমাদের নিরাপত্তা কে দিবে— এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।’

সমাবেশে ধর্ষণ সংক্রান্ত আইনের বিভিন্ন দূর্বলতা তুলে ধরে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রাহী নায়াব ঐশী বলেন, ‘প্রথমেই আমাদের ধর্ষণের আইনের সংজ্ঞা পরিবর্তন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের সামাজিক সংস্কার করতে হবে। সেজন্য রাষ্ট্রের দায়িত্ব বাংলাদেশের মানুষের মনস্তত্ত্বে যে ‘ভিক্টিম ব্লেমিং’ গেড়ে বসেছে— একটা ধর্ষণ হলে আগে এগিয়ে যাই কোন পরিস্থিতিতে তা হয়েছে, কোন জায়গায় মেয়েটা ছিল, সে কি পোষাক পড়েছে— আমাদের এ ধরনের বিষয়গুলো বদলাতে হবে। এটা একটা জঞ্জাল, আর এ জঞ্জাল পরিষ্কার না করলে ‘নতুন বাংলাদেশ’ এর স্বপ্ন কোনোভাবেই বাস্তবায়ন সম্ভব না। রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে যেন বাংলাদেশে ধর্ষণের সংস্কৃতি বন্ধ হয়।’

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান বলেন, ‘আমরা যে সমাজে বাস করি সেখানে যৌন নিপীড়নকে স্বাভাবিকীকরণ করা হয়েছে। আমরা সবাই কোন না কোন ধর্ষক বা যৌন নিপীড়ককে ব্যক্তিগতভাবে চিনি। একটা মেয়ে যখন ধর্ষণের শিকার হয় তখন তার জীবন তছনছ হয়ে যায়। প্রথমত, সে একটি অপরাধের শিকার হয়, তার উপর সে সামাজিকভাবে ঘৃণিত হয়। অপরদিকে যারা ধর্ষণটা করেন তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এমন, যে বড়লোক হলেই তাকে মদ ভোগ, নারী ভোগ করতে হবে। এগুলো কাছাকাছি বিষয়। এগুলোকে তারা অপরাধ বলে মনে করেন না।’

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো— নয় বছরের শিশু ধর্ষণসহ সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সকল ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুততম সময়ে ধর্ষককে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা ও শাস্তি বাস্তবায়ন, ধর্ষণের শিকার শিশুটির এবং সম্প্রতি সংঘটিত ধর্ষণের শিকার নারীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ খরচ রাষ্ট্রকে বহন করা এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা, দ্রুত সময়ের মধ্যে ধর্ষণ সংক্রান্ত আইনগুলোর ‘যৌক্তিক’ সংস্কারের জন্য কমিটি গঠন, ধর্ষণ সংক্রান্ত আইনের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি ও ধর্ষকদের শাস্তির ব্যাপারে গণমাধ্যমের দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত ও শিশু ধর্ষণসহ যেকোনো ধরণের ধর্ষণের শিকার নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যগত ট্রমার বিষয়ে সরকারি উদ্যোগে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’র সংগঠক ইসাবা শুহরাত, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী নওরীন সুলতানা তমা, তাশাহুদ আহমেদ রাফিম, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিরা তামান্না, আকাশ বিশ্বাস, ইংলিশ ফর স্পিকারর্স অব আদার ল্যাংগুয়ে বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা ইয়াসমিন প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এআইএন/এইচআই

আইন সংস্কার ধর্ষণ সমাবেশ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ফটোসাংবাদিক শোয়েব মিথুন আর নেই
২১ অক্টোবর ২০২৪ ২১:০৭

সম্পর্কিত খবর