Wednesday 23 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চোর চক্রের সাথে আঁতাত, এসআইসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৫৭

ঢাকা: রাজধানীর শংকর এলাকায় একটি বাড়ির গ্যারেজ থেকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ভূক্তভোগী থানায় অভিযোগ করতে গেলে উল্টো তাকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে থানা থেকে বের করে দেয় ধানমন্ডি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজমাইন এশা। এ ঘটনায় পুলিশের ওই এসআইসহ চোর চক্রের ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে ভূক্তভোগী।

রোববার (২০ অক্টোবর) অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান এর আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভূক্তভোগী রাজন চন্দ্র রায়। মামলাটি আমলে নিয়ে ধানমন্ডি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে এজহারভূক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

বিজ্ঞাপন

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১০ জানুয়ারি শংকরে একটি বাড়ির গ্যারেজ থেকে নাজমুল হক সুমন, ইব্রাহীম খলিল, সামিউল ইসলাম, রিশাদ রহমান ও ইমন খান ইয়ামাহা ব্রান্ডের আর-১৫ ভার্সন-৩ এর একটি মোটরসাইকেল চুরি করে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় ভূক্তভোগী রাজন চন্দ্র রায় ধানমন্ডি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়।

লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর ধানমন্ডি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আজমাইন এশা তদন্তের দায়িত্ব পায়। দুদিন পর ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা আবারও শংকর এলাকার ছায়ানটের সামনে ভূক্তভোগীকে একা পেয়ে মারধর করে। এ সময় চক্রের সদস্যরা ভূক্তভোগীকে মারধর করতে করতে বলে, আমাদের বিরুদ্ধে থানায় আর অভিযোগ করবি। যার কাছে অভিযোগ করছস সে আমাদের দলের লোক। পুরো ধানমন্ডি থানা আমাদের কেনা। তোরা আমাদের কিছু করতে পারবিনা। এ ঘটনার পর ভূক্তভোগী আবারও থানায় গেলে, এসআই আজমাইন এশা ভূক্তভোগীকে গালাগালি করে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া ভয় দেখিয়ে থানা থেকে বের করে দেয়। ওই সময় কয়েক দফা থানায় গেলেও এসআই আজমাইন এশা নানা ধরনের হুমকি দিয়ে তাদের থানা থেকে বের করে দেয়।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সরকার পতনের পর ধানমন্ডি থানার এসআই আজমাইন বদলি হয়ে যায়। এরপর ধানমন্ডি থানায় গত ৭ অক্টোবর আবারও লিখিত অভিযোগ দেয় ভূক্তভোগী। লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর পুলিশ ভূক্তভোগীকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। গত ৭ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা ভূক্তভোগীকে নানা ধরনের হুমকি দিলে গত ১৬ অক্টোবর আবারও ধানমন্ডি থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডাইরি করে।

জানা যায়, ছিনতাই চক্রের সদস্যরা তৎকালীন সরকার আওয়ামীলীগের বিভিন্ন এমপি, ছাত্রলীগ নেতা ও পুলিশের পরিচয় দিয়ে ছিনতাই থেকে রেহাই পেতে প্রভাব বিস্তার করতো। এছাড়াও পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কাজ করা এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সরাসরি এ সদস্যদের নেপথ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

ছিনতাই চক্রের সদস্যরা কখনো থানা পুলিশের ঝামেলায় পড়লে সরাসরি অন্যান্য পরিচিত পুলিশ সদস্যদের দিয়ে ফোন দিয়ে প্রভাব বিস্তার করতেন। থানায় মোটরসাইকেল ছিনতাই এর অভিযোগ দেওয়ার পর ওই পুলিশ সদস্য মোটরসাইকেল উদ্ধার করে দেওয়ার কথা বলে ভূক্তভোগীদের থানায় ডেকে মোটরসাইকেল এর মূল কাগজপত্র নিয়ে নেয়। এ ঘটনায় বাসায় থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজও উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ।

ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া ভূক্তভোগী রাজন চন্দ্র রায় জানান, ‘মোটরসাইকেল চুরি হওয়ার পর আমি থানায় লিখিত অভিযোগ দেই। এরপর এসআই আমাকে মোটরসাইকেল দেওয়ার আশ্বাসে আমার থেকে গাড়ীর মূল কাগজপত্র ও ৫০ হাজার টাকা নেয়। এরপর এসআই আমাকে আমার গাড়ী না দিয়ে নানা ধরনের হুমকি দিতে থাকে। এমন কি থানায় আবার কোন অভিযোগ নিয়ে আসলে মাদক মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমার কষ্টের টাকায় কেনা মোটরসাইকেল নিয়ে ছিনতাইকারীরা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন সমাধান না পেয়ে আমি আদালতের দ্বারস্ত হয়েছি।’

সারাবাংলা/ইউজে/এইচআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর