ভোটারদের ডলার দিতে ইলন মাস্কের প্রস্তাব ‘অবৈধ’
২২ অক্টোবর ২০২৪ ০১:৫৭
টেক বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্ক ঘোষণা দিয়েছেন, ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ পর্যন্ত দৈনিক গুরুত্বপূর্ণ ‘সুইং স্টেট’র একজন নিবন্ধিত ভোটারকে দিনে এক মিলিয়ন ডলার দেবেন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) পেনসিলভেনিয়ার একটি টাউনহলে এ ঘোষণা দেন তিনি।
টাউনহলের ইভেন্টে তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পপন্থি তার সংগঠন আমেরিকা পিএসি’তে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে যেকোনো একজনকে দৈনিক এক মিলিয়ন-ডলার উপহার দেওয়া হবে। তবে শর্ত হচ্ছে, সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই তার ট্রাম্প-পন্থি আমেরিকা পিএসি পিটিশনে সই করতে হবে এবং নির্বাচনের দিন পর্যন্ত এটির মুখপাত্র হতে হবে।’ স্বাক্ষককারীদের মধ্যে একজনকে লটারির মাধ্যমে বেছে নেওয়া হবে।
তবে ডেমোক্রেটিক দলের সমর্থকরা ইলন মাস্কের কৌশলকে ‘গভীরভাবে উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জোশ শাপিরো, একজন ডেমোক্রেটিক সমর্থক বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারীর অর্থপ্রদানের দিকে নজর দেওয়া উচিত।’ নির্বাচন আইন বিশেষজ্ঞ রিক হ্যাসেন তার ব্যক্তিগত আইন ব্লগে লিখেছেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন মাস্কের প্রস্তাব ‘নিশ্চিতভাবে অবৈধ’।
মার্কিন ফেডারেল আইন বলে, ‘কেউ যদি ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন ও অর্থ প্রদান করে, কিংবা অর্থ প্রদানের প্রস্তাব দেয় বা গ্রহণ করে, সেক্ষেত্রে তার ১০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা বা পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে হবে।’
যদিও মাস্ক কৌশলগতভাবে ভোটারদের একটি ফর্মে সই করতে বলছেন। তবে রিক হাসেন কৌশলটির পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হাসেন বলেন, ‘পিটিশনে কে সই করতে পারে? শুধুমাত্র সুইং স্টেটে নিবন্ধিত ভোটাররা, যা এর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।’
পেনসিলভেনিয়ায় ইলন মাস্ক ভোটারদের পিটিশনে সই করার জন্য ১০০ ডলার দিচ্ছেন। এছাড়াও অন্য কোনো ভোটারকে যুক্ত করার বিনিময়ে প্রত্যেকে আরও ১০০ ডলার দেওয়া হচ্ছে। কৌশলটি মার্কিন নির্বাচন আইনের অধীনে একটি ফাঁক দিয়ে বের হয়ে যেতে পারে। কারণ, কাউকে ভোট দেওয়ার জন্য সরাসরি অর্থ দেওয়া হচ্ছে না। এখানে পিটিশনে সই করার জন্য অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) প্রচারণা চালানোর সময় ট্রাম্পকে ইলন মাস্কের উপহার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমি এটি সম্পর্কে জানি না, আমি তার সঙ্গে প্রায়ই কথা বলি এবং তিনি আমার বন্ধু।’
দেশটির নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য থেকে দেখা গেছে, জুলাই মাসে ‘আমেরিকা পিএসি’ গড়ে তুলেন। এই প্রতিষ্ঠানটি ট্রাম্পের প্রচারণায় সমর্থনের জন্য ইলন মাস্ক ও কয়েকজন ব্যবসায়ী মিলে গঠন করেছেন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে ভোটারদের কাছে টানতে কাজ করে থাকে আমেরিকা পিএসি।
এর আগে জানা যায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি শিবিরে গত তিন মাসে প্রায় সাড়ে সাত কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছেন টেক জায়ান্ট টেসলার স্বত্বাধিকারী ইলন মাস্ক।
সারাবাংলা/এইচআই/পিটিএম