আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি, দেখা হবে আদালতে: ব্যারিস্টার সুমন
২২ অক্টোবর ২০২৪ ০২:১৭
ঢাকা: হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, আমি পুলিশের সাথে যাচ্ছি। দেখা হবে আদালতে। দোয়া করবেন সবাই।
সোমবার (২১ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় নিজের ভেরিফায়েড আইডি ও ফেসবুক পেইজে এক ভিডিও বার্তা দিতে গিয়ে এ কথা লিখেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখায় মিরপুর মডেল থানা পুলিশ।
ব্যারিস্টার সুমন ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘অনেকদিন পর ভিডিওতে আসলাম। আমি আসলে প্রথমেই জানাতে চাই, অনেকেই বিভিন্নভাবে নিউজ করেছেন যে, আমি দেশের বাইরে চলে গেছি। কেউ বলছেন, লন্ডন হয়ে আমেরিকা গেছি, বিভিন্ন নিউজ করেছেন। আসলে কোনোটাই সঠিক না। আমি বাংলাদেশেই আছি, ঢাকা শহরেই আছি। ৫ আগস্টের পরে আমি কোথাও যাই নাই। শুধুমাত্র সিকিউরিটির কারণে আমি একটু গোপনে ছিলাম। এটাই হচ্ছে আমার বাস্তবতা।’
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের একটা বলতে চাই যে, ৫ আগস্টের পরে অনেকেই আমাকে ইন্ডিয়া দিয়ে চলে যাওয়ার কথা বলছেন, আমেরিকা চলে যাওয়ার কথা বলছেন। কিন্তু আমার কাছে, আমার মনে কখনো সায় দেয় নাই। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, আমি কোনোদিন দুর্নীতি করি নাই, ঢাকা শহরে ১০ বছর ব্যারিস্টার থাকার পরেও কোনো প্লট আমার নাই, ফ্ল্যাট নাই। আমার একটা গাড়ি ছাড়া, আমার নামে কোনো সম্পদ নাই। তারপরও আমি কোনো অপরাধ করি নাই। কেন আমি আমার দেশ ছেড়ে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দেশেই তো আমার লাশ আসবে, এখানেই আমার কবর হবে- এটাই আমার বিশ্বাস। সুতরাং এই দেশ ছাড়ার কোনোদিন আমার ইচ্ছা হয় নাই। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমার নামে যদি কোনো মামলা হয়ে থাকে, যেহেতু আমি আইনজীবী, তাই আইনজীবী হিসেবে মোকাবিলা করব। এই সৎ সাহস আমার আছে। আর যেহেতু আমি আইনজীবী, আইনের প্রতিও আমার বিশ্বাস আছে।’
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি অনেক সম্পদ করতে পারতাম। আমার হালাল ইনকাম দিয়েই করতে পারতাম। কিন্তু পুরা টাকাটাই আমার চুনারাঘাট-মাদবপুর ও বিভিন্ন জায়গায়, বন্যার সময় আমি চেষ্টা করছি মানুষের কল্যাণে দাঁড়ানোর। ইভেন সংস্কারের কার্যক্রমেও আমি এমন সব লোকের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলাম, যাদের বিরুদ্ধে এখন মামলা চলতেছে। এগুলো আমিই প্রথম শুরু করছিলাম।’
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘তারপরও আমি মনে করি, দেশের কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে। এখানে ক্রেডিট নেওয়ার কিছু নাই। যদি দেশকে ভালোবাসেন দেশের সংস্কারে কাজ করতে হবে- এটাই স্বাভাবিক। আমিও মনে করি, সংস্কারের জন্য যদি আবারও কাজ করার সুযোগ পাই, আমি কাজ করব। আর সুযোগ না পাইলেও আমার কোনো অসুবিধা নাই। আমি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে আমার প্র্যাকটিসটা চালিয়ে যেতে চাই।’
ভিডিও বার্তার শেষে তিনি বলেন, ‘আমার এই সম্পদ যেকোনো সংস্থা দেখতে পারে তদন্ত করে যে, আমার নামে একটা গাড়ি ছাড়া আর কিছু আছে কি না। আমি কোনো সম্পদ করি নাই নিজের ইনকাম দিয়ে। এতদিন ব্যারিস্টার থাকার পরও, ভালো প্র্যাকটিস করার পরও যা সম্পদ ছিল মানুষের কল্যাণে দিয়ে গেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে, মানুষের কল্যাণ করাই সবচেয়ে বড় ইবাদত।’
সারাবাংলা/পিটিএম