নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল পুনরুজ্জীবিত
২২ অক্টোবর ২০২৪ ১০:০২
ঢাকা: রাজনৈতিক দল হিসেবে বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আপিল পুনরুজ্জীবিত করেছেন আপিল বিভাগ। এর মাধ্যমে নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল নতুন করে শুনানি হবে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।
গত ১ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করার আবেদনের শুনানির জন্য আজকের দিন নির্ধারিত ছিল। আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
২০০৮ সালের ৪ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীকে সাময়িক নিবন্ধন দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের ওই সময়কার সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির তৎকালীন মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ ব্যক্তি জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন।
রিটে জামায়াতের ওই সময়কার আমির মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও নির্বাচন কমিশনসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়।
ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক (পরে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি মো. আবদুল হাইয়ের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি রুল জারি করেন। রুলে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনি কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০বি (১) (বি) (২) ও ৯০ (সি) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
এরপর জামায়াত তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। এসব সংশোধনীতে দলের নাম ‘জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ করা হয়।
জারি করা সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ ২০১৩ সালের ১ আগস্ট বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেন।
হাইকোর্টের এই রায় স্থগিত চেয়ে জামায়াতের করা আবেদন একই বছরের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। পরে একই বছরের ২ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে জামায়াতে ইসলামী নিয়মিত আপিল করে। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে শেখ হাসিনার সরকার।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারায় জামায়াত ও ছাত্রশিবিরসহ তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের ২০ দিন পর গত ২৮ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর