Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নাশতা না করে বিশৃঙ্খলা করায় চাকরি গেল ২৫২ এসআইয়ের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:৫০

ঢাকা: রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত ২৫২ এসআইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার ঘটনা দেশব্যাপী আলোচনার ঝড় তুলেছে। ওইসব এসআইকে চাকরিচ্যুতির যে নোটিশ দেওয়া হয়েছে তা থেকে জানা যাচ্ছে, নাশতা না করে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে একাডেমিকে হেয় করার মতো ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আচরণ ও এর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে না পারার কারণেই চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাদের।

গত ১৭ অক্টোবর এই ২৫২ জনকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। পরে আজ মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে পুলিশ সদর দফতর ও সারদা পুলিশ একাডেমি তাদের অব্যাহতির তথ্য নিশ্চিত করে। তাদের অব্যাহতির চিঠিও দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ একাডেমি বলছে, গত ১ অক্টোবর সকালে পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রবেশনারস ব্যাচ ২০২৩-এর সমাপনী কুচকাওয়াজের অনুশীলন চলছিল। এ সময় পুলিশ একাডেমির নির্ধারিত মেন্যু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সব প্রশিক্ষণার্থীর জন্য সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়।

চাকরিচ্যুতির চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনি (অভিযুক্ত এসআই) ওই নাশতা না খেয়ে হইচই করে মাঠের মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন। অন্যান্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের সংগঠিত করে একাডেমিকে হেয় করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। অন্যদের সঙ্গে হইচই করতে করতে নিজের খেয়াল-খুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান।

আরও পড়ুন- শৃঙ্খলাভঙ্গ: সারদায় ২৫২ ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, একজন প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআই হিসেবে এ আচরণ ও বিনা অনুমতিতে প্যারেড মাঠ থেকে বের হয়ে ব্যারাকে চলে যাওয়া সম্পূর্ণভাবে শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এ আচরণ মাঠের সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমকে চরমভাবে ব্যহত করেছে এবং অন্য প্রশিক্ষণার্থীদের শৃঙ্খলাভঙ্গ করতে উৎসাহ দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের এ ঘটনায় পুলিশ পরিদর্শক মহসিন আলী পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ (অতিরিক্ত আইজিপি) বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এসআইরা শৃঙ্খলাভঙ্গ করেছিলেন বলে উঠে আসে প্রতিবেদনে। পরে একাডেমির অধ্যক্ষের পক্ষে পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড লজিস্টিকস) অভিযুক্ত এসআইদের তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে নির্দেশনা দেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনি নির্ধারিত তিন দিন সময়ের মধ্যে কৈফিয়তের জবাব দাখিল করেন। কিন্তু আপনার দেওয়া জবাব পর্যালোচনায় সন্তোষজনক নয় বলে প্রতীয়মান হয়। ফলে আপনার ওই শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল পদ হিসেবে বিবেচিত উপপরিদর্শক পদে পদে কাজ করার পথে বড় ধরনের অন্তরায় ও অযোগ্যতার সামিল।

এ কারণেই শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমের কারণে পুলিশ রেগুলেশন অনুযায়ী অভিযুক্ত এসআইদের মৌলিক প্রশিক্ষণ থেকে ডিসচার্জের অনুমোদনের জন্য পুলিশ সদর দফতরে চিঠি পাঠানো হয়। ১৫ অক্টোবর এক চিঠিতে পুলিশ সদর দফতর বিষয়টি অনুমোদন করে। পরে গতকাল সোমবার (২১ অক্টোবর) এসব এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এদিকে একই ব্যাচের ২৫২ জন এসআই কাডেটকে একযোগে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়টি অনলাইন-অফলাইনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। এই অব্যাহতির পেছনে শৃঙ্খলাভঙ্গ ছাড়াও অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নও করেন অনেকে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে তাকেও একই প্রশ্ন করা হয়। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে নয়, শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়েই তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

সারাবাংলা/ইউজে/এমপি

এসআই ক্যাডেট এসআইদের চাকরিচ্যুতি পুলিশ পুলিশ একাডেমি প্রশিক্ষণরত এসআই শৃঙ্খলাভঙ্গ সারদা পুলিশ একাডেমি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর