Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে বঙ্গভবন ঘেরাও’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২২ অক্টোবর ২০২৪ ২০:৪৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে চট্টগ্রাম নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে নগরীর ষোলশহর স্টেশনে জড়ো হন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠকরা। এসময় তারা ‘এক দফা এক দাবি, চুপ্পু তুই কবে যাবি, আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হুঁশিয়ার সাবধান, আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা হুঁশিয়ার সাবধান’ এ ধরণের বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

বিজ্ঞাপন

বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সমাবেশ শেষ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা মিছিল বের করেন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মিছিল জিইসির মোড়ে এসে শেষ হয়।

সমাবেশে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসররা এখনও বাংলাদেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বসে আছে। তারা থাকলে আমাদের যে সকল ভাইয়েরা রক্ত দিয়ে গেছে তাদের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে। স্বৈরাচারের দোসর চুপ্পু এখনও গদিতে বসে আছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আর কোনো আলটিমেটাম বেঁধে দিতে চাই না। আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ চুপ্পু পদত্যাগ না করে তাহলে আলটিমেটাম ছাড়া বঙ্গভবন ঘেরাও করা হবে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে অপসারণ করতে হবে, না হয় আমরা যে কোনো সময় বঙ্গভবন ঘেরাও করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি সন্ত্রাসী লীগ এখনও বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে মাথাচাড়া দিচ্ছে। তোমরা এখনও হিসেব বুঝোনি। আমরা তোমাদের গর্ত থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছি। তোমরা গর্ত থেকে বের হলেই তোমাদের ধরা হবে। পালানোর জায়গা পাবে না। যারা এখনও দেশের আনাচে-কানাচে দেশকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা করছেন আপনারা হুঁশিয়ার হয়ে যান। আপনাদের জায়গা এ বাংলাদেশের মাটিতে হবে না।’

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে রাফি বলেন, ‘গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা করা হয়েছে। আপনারা কিন্তু পালানোর জায়গা পাবেন না। আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ঐক্য দেখেছি। এরকম কোনো হেডাম দেখাবেন না যে আপনাকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়। আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি আপনারা তাদের গ্রেফতার না করেন তাহলে ছাত্র-জনতা আইন হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।’

সমন্বয়ক রাফি বলেন, ‘২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। তাদের হাতে আমাদের রক্ত লেগে আছে। আওয়ামী লীগের হাতে আমাদের রক্ত লেগে আছে। কোনো খুনিরা এ বাংলাদেশের মাটিতে রাজনীতি করার যোগ্যতা রাখে না। সুষ্ঠু রাজনীতি এ খুনিদের দ্বারা কখনও হবে না।’

এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণ চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে গণঅভ্যুত্থান প্রতিরক্ষা মঞ্চ নামে একটি সংগঠন।

সমাবেশে সাংবাদিক ফারুক মুনির বলেন, ‘দেড় হাজারের বেশি ছাত্র-জনতার রক্তের সঙ্গে কেউ বেঈমানি করতে পারবে না। অনতিবিলম্বে বিপ্লবী সরকারের ইশতেহার ঘোষণা করতে হবে। বাংলার মাটিতে পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের কোনো দোসরকে আমরা সহ্য করবো না। আমরা দ্রুত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।’

তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের অনেক জায়গায় শেখ হাসিনা সরকারের দোসররা রয়ে গেছে। তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিগত দিনে তাদের যত অপকর্ম আছে সবকিছুর বিচার করতে হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। এখানে তার পদত্যাগ করার কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে কার্যকর সংবিধানকে অকার্যকর করা হয়েছে। আমরা ওই পঞ্চদশ সংশোধনীর সংবিধান বাতিল চাই। এ সংবিধান যিনি কাটাছেঁড়া করে অকার্যকর করেছেন তাকে পূনর্বাসনের সুযোগ আমরা কাউকে দেব না।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, চট্টগাম কলেজের সমন্বয়ক ইবনে হোসাইন বলেন, ‘পাঁচ আগস্টের পর যে সরকার গঠন হয়েছে তারা কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন। আর এসব প্রতিবন্ধকতা যারা সৃষ্টি করছেন তারা আওয়ামী লীগের দোসর। তাদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি চুপ্পু। সে চুপ্পুকে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করার আহবান জানাই। না হলে আমরা ছাত্ররা আবার একটি নতুন গণ-অভ্যুত্থানের ডাক দিতে পারি। আমরা চাই না আর সহিংসতা হোক। তাই আমরা দ্রুত রাষ্ট্রপতি চুপ্পুর অপসারণ চাই।’

সারাবাংলা/আইসি/এইচআই

চট্টগ্রাম রাষ্ট্রপতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর