সেন্টমার্টিন নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান টোয়াবের
২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:২৫
ঢাকা: সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সরকারকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে পর্যটন শিল্পের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠন ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুল সালাম হলে সেন্টমার্টিন বিষয়ক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ, পার্বত্য অঞ্চলে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড আইনের কালো ধারা বাতিলের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পর্যটন শিল্পের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংগঠনটি এই দাবি জানান।
টোয়াবের সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, আমাদের আপত্তি সত্ত্বেও সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন ও পর্যটক যাতায়াত সীমিত করায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসে সেন্টমার্টিনে কোনো পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দিনে সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্টমাটিন ভ্রমণ করতে পারবেন এবং রাত্রিযাপন করতে পারবেন। আর ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্টমার্টিনে সরকার পর্যটক যাতায়াত বন্ধ রাখবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নাতার জন্য। এতে করে পর্যটন শিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হবে এবং এই খাতের উদ্যোক্তারা সর্বশান্ত হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, সেন্টমার্টিনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ বাস করে। এরা সবাই পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। সেন্টমার্টিনে পর্যটন বন্ধ হলে এরা সবাই বেকার হয়ে যাবে। সেই সাথে উদ্যোক্তাদের আর্থিক বিনিয়োগ এখন ঝুঁকির মুখে পড়বে। শুধু তাই নয়, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞার কারণেও পর্যটন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং উদ্যোক্তাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
এছাড়া ট্যুর অপারেটরদের নিবন্ধন সংক্রান্ত নতুন নিয়ম ও শর্তাবলী উল্লেখ করার বিষয়গুলো তুলে ধরেন এবং তা মেনে চলা অত্যন্ত কঠিন বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, গেজেটে উল্লেখিত বিধিনিষেধ ও নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিধিমালায় দেখা যায় ট্যুর অপারেটর এ ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) লাইসেন্স আবেদনের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা নিবন্ধন সনদ ফি, ১০ লাখ টাকা ব্যাংক স্থিতির সার্টিফিকেট ও তিন লাখ টাকা জামানত প্রদান করতে হবে যা ট্যুর অপরেটরদের জন্য সম্ভবপর নয়। এতে করে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে নতুন উদ্যোক্তরা নিরুৎসাহিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের পক্ষ থেকে সেন্টমার্টিনে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার কঠোরভাবে বন্ধ করে রাত্রি যাপনসহ যাবতীয় বিধি-নিষেধ ব্যাতিরেকে পর্যটন চালু রাখা, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন বিকল্প পথ তৈরী করা, ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড, লাইসেন্স, নবায়ন ফি ও ব্যাংকে স্থিতি কমানো ও জামানত বাতিল, ট্যুর অপারেটর সেবার ওপর মূসক প্রত্যাহার, সারা বছরব্যাপী সুন্দরবনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল চালু রাখা, পার্বত্য অঞ্চলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহর ও পর্যটকদের জন্য অনুমতি গ্রহণ সহজীকরণ করার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন টোয়াবের পরিচালক (মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন) মোহাম্মাদ ইউনুছ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন টোয়াবের নেতারাসহ ট্যুর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
সারাবাংলা/এনআর/এসআর