রাজশাহীর বাজারে সবজিতে স্বস্তি, কমেছে দামের অস্থিরতা
২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৪৪
রাজশাহী: রাজশাহীর বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমতে শুরু করেছে সবজির দাম। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অস্থিরতায় এসেছে স্বস্তি। সপ্তাহ ব্যবধানে হাতেগোনা কয়েকটি ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে ১০-৩০ টাকা পর্যন্ত।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে এই সপ্তাহে শীতকালীন সবজি বেশি উঠেছে। দাম তুলনামূলক কম। তবে মাংসের দাম কমতির দিকে থাকলেও বাড়তির দিকে রয়েছে মাছের দাম। এছাড়াও কমেছে ডিমের দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম।
বিক্রেতারা জানান, সরবরাহ বাড়ায় গত সপ্তাহের তুলনায় শাক-সবজির দাম কিছুটা কমেছে। সামনে কোনো সঙ্কট না হলে দাম হাতের নাগালে চলে আসবে।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৬০-৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা ও পটল ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ২০-২৫ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, টমেটো ১৮০ টাকা, শিম ১২০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।
এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ১২০-১৪০ টাকা ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৪০-৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা এবং লাউ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।
দাম কমেছে কাঁচা মরিচেরও। গত সপ্তাহে বাড়তির দিকে থাকা কাঁচা মরিচের দাম কমে চলতি সপ্তাহে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা। এছাড়াও আলু বিক্রি ৬০ টাকা কেজিতে।
বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম খুচরা পর্যায়ে ১৪৪-১৪৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৪ টাকায়। এতে প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ১২ টাকা। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, ডিম ও সবজির দাম কমায় স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে বাজারে। মনিটরিং অব্যাহত রাখলে দাম আরও কমে আসবে।
সাহেববাজারে আসা জসিম উদ্দিন জানান, অনেকটাই কমে এসেছে শাক-সবজির দাম। ডিমের দামও কমেছে। সরকার মনিটরিং বজায় রাখলে বাজার নাগালে রাখা সম্ভব।
বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকায় এবং সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৩০০ টাকা। আর সাদা লেয়ার ২৬০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। এ ছাড়া জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।
তবে বাজারে অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।
এদিকে বাজারে মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৭০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই।
ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান। আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
সারাবাংলা/এমপি