আন্দোলনকারীদের ‘জঙ্গি’ বলা সেই সিভিল সার্জন এখন আ.লীগ বিরোধী!
২৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:২৯
যশোর: কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান আন্দোলনবিরোধী বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গত সরকারের শাসনামলে নিজকে আওয়ামীপন্থি পরিচয় দেওয়া সেই সিভিল সার্জন এখন আওয়ামীবিরোধী হওয়ার চেষ্টা করছেন। নিজকে ডানপন্থি বলেও দাবি করছেন তিনি। এদিকে, পিনাকী ভট্টাচার্য ফেসবুকে তাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ায় ডা. মাহমুদুল হাসানকে নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
জানা গেছে, কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময়ে যশোর সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। আন্দোলনের বিরোধিতা করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে জেলার চিকিৎসক নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন তিনি। ওই সমাবেশের ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিও’তে সিভিল সার্জন আন্দোলনকারীদের ফ্যাাসিবাদী ও জঙ্গি বলে আখ্যা দেন।
তিনি দেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে যে হত্যাযজ্ঞ ভাংচুর চালানো হয়েছে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি আন্দোলনাকারীদের ঘৃণা করেন বলেও উল্লেখ করে এই শক্তিকে প্রতিহত করার হুমকি দেন। ওই সময় তিনি সর্বস্তরের চিকিৎসককে এক দফার দাবির বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হতে বলেন।
৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর বিগত সরকারের সময়ে আওয়ামীপন্থি পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তার করা সেই সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান এখন বোল পাল্টানো শুরু করেছেন। তিনি ডানপন্থি পরিচয় দিয়ে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।
ছাত্র আন্দোলনের সময়ে সিভিল সার্জনের বিরোধিতা করার বক্তব্য শেয়ার করে পিনাকী ভট্টাচার্য্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন ‘যশোরের বর্তমান সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান দাবি করতেছে উনি নাকি ছাত্রজীবনে শিবির করতেন। ফ্যাসিবাদের দোসর ও গণশত্রুদের ডেটাবেইজ হইতেছে। কাউকে রঙ পাল্টাইয়া বিপ্লবী সাজতে দেয়া হবে না।’
সূত্র জানিয়েছে, মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগ করা ডা. মাহমুদুল হাসান এর আগে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছিলেন। সেখানে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এরপর তার ভাই কুড়িগ্রাম-৪ আসনের সাবেক সংসদ বিপ্লব হাসান পলাশ, যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ কাজী নাবিল আহমেদ ও কেশবপুর আসনের সাবেক সংসদ আজিজুর ইসলামের ডিও লেটার নিয়ে তিনি যশোরের সিভিল সার্জন হন।
এছাড়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, যশোর সিভিল সার্জন অফিস ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানসমূহে ১১-২০তম গ্রেডে (৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি) ১৯৯টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। অভিযোগ আছে, এসব নিয়োগ সম্পন্ন করার জন্য আট উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে মোটা টাকার বাণিজ্য শেষ করেছেন ডা. মাহমুদুল হাসান। এখন এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিও-বক্তব্য আমার নিজের। কিন্তু সে সময়ে আমাদের কিছুই করার ছিল না। ওই কর্মসূচিতে আমরা স্বেচ্ছায় যাইনি।’ এ সময় তিনি তার পরিবারকে ডানপন্থি বলেও দাবি করেন।
সারাবাংলা/এসআর