Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফ্যাসিবাদী সরকার গণমাধ্যমকে নিজেদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২৬ অক্টোবর ২০২৪ ২০:২৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে ‘ফ্যাসিবাদের বয়ান বনাম গণমানুষের গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনার

ঢাকা: বিগত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী সরকার দেশের গণমাধ্যমগুলোকে নিজেদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে ‘ফ্যাসিবাদের বয়ান বনাম গণমানুষের গণমাধ্যম’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে যোগাযোগবিদরা এ মন্তব্য করেন।

আলোচনা সভায় ‘ফ্যাসিবাদের বয়ান বনাম গণমানুষের গণমাধ্যম’ শিরোনামে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. খোরশেদ আলম। এ ছাড়া, আলোচনায় অংশ নেন প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, প্রথম আলো ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির, দ্য ডেইলি স্টার বাংলার সম্পাদক গোলাম মোর্তোজা, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মাহবুবুল আলম এবং নিউ এইজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীর।

খোরশেদ আলম বলেন, ‘দেশে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪৫টি চ্যানেল ১২০০ পত্রিকা এবং অসংখ্য অনলাইন পোর্টাল বিদ্যমান থাকলেও সেগুলোর বাক স্বাধীনতা খুবই রুদ্ধ ছিল।’

তিনি বলেন, ‘মালিকানার লাইসেন্স দেওয়া হতো রাজনৈতিক দল, পরিবার ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দেখে। চ্যানেলগুলো যেকোনো সময় বন্ধ করে দেওয়ার এক ভুত দাপিয়ে বেড়াতো এবং সেটা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠানোর মাধ্যমে আরও বেশি পাকাপোক্ত হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমপি, মন্ত্রী ও বড় বড় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ ও যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ মিডিয়ার হাতে থাকার পরেও তাদের সেগুলো প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। মিডিয়াগুলোতে সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো সরকারের আশীর্বাদপুষ্ঠ পত্রিকাগুলোকেই। বেসরকারি বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রেও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করতো।’

বিজ্ঞাপন

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাংবাদিকতা বিভাগের কারিকুলাম নিয়ে তিনি সমালোচনা করে বলেন, ‘সেকেলে পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকতা বিভাগকে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিনির্ভর এবং প্রায়োগিক করে গড়ে তুলতে হবে।’

সাংবাদিকতা বিভাগের কারিকুলাম নিয়ে সমালোচনা করে নিউ এইজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, ‘গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদেরকে ইতিহাস সম্পর্কে নিরপেক্ষ ধারণা দিতে হবে। আওয়ামী বিএনপি পাক্ষিক ইতিহাস পড়ানোর কারণে বর্তমানে সাংবাদিকরা শহিদ আসাদকে চেনে না, সিরাজ শিকদার সম্পর্কে জানে না, মাওলানা ভাসানীর নাম শুনলে অবাক হয়ে যায়।’

প্রথম আলো ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির বলেন, ‘সাংবাদিকরা বিগত পনেরো বছর ধরে এক ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে সাংবাদিকতা করছে। কেউ কেউ আবার নিজের জায়গাটাকে মসৃণ করতে নেত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকতো।’

তিনি বলেন, ‘অপতথ্যগুলোকে চিহ্নিত করতে পারাটা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ প্রত্যেক মিডিয়া হাউজের ফ্যাক্টচ্যাকিং সেকশন থাকা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মাহবুবুল আলম বলেন, ‘গত পনেরো বছরে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সর্বনাশ হয়ে গেছে। তবে এখন বাংলাদেশ টেলিভিশনের নেতৃত্বে বেশকিছু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন এসেছে। আশা করা যায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ইতিবাচক মনোভাব ফিরিয়ে আনবে।’

এ সময় স্বাধীন গণমাধ্যম কমিশন গঠন এবং নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের জোরালো দাবি জানান আলোচকরা।

সারাবাংলা/এআইএন/পিটিএম

গণমাধ্যম টপ নিউজ ঢাল ফ্যাসিবাদী সরকার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর