‘রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে’
২৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৪৫
ঢাকা: রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ বা তার পদত্যাগের যে দাবি উঠেছে সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বন, পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, এটা অনেক বড় বিষয়। এটা নিয়ে গোপনে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যখন সিদ্ধান্ত হবে, তা প্রকাশ্যেই হবে। এখানে তাড়াহুড়া করার যেমন কোনো সুযোগ নেই, তেমনি দীর্ঘদিন ঝুলিয়ে রাখারও সুযোগ নেই। রাজনৈতিক ঐক্য যত দ্রুত হবে সিদ্ধান্তও তত দ্রুত হবে। এখন রাজনৈতিক ঐক্য কোন দিকে যাবে, সেটা তো এখনই বলা সম্ভব নয়।
রোববার (২৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলেছি— রাষ্ট্রপতির বিষয়ে একটা বড় ধরনের কথা হচ্ছে যে তিনি এই পদে আর থাকতে পারেন না। এখন প্রশ্ন উঠেছে— প্রথমত, তিনি (রাষ্ট্রপতি) যেটা বলেছেন সেটা সাংবিধানিক শপথ লঙ্ঘনের সামিল কি না; দ্বিতীয়ত, একটি বিপ্লবের পর গঠিত সরকারের ক্ষেত্রে যিনি এখন রাষ্ট্রপতি পদে আছেন তিনি সাবেক ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, যা আমাদের আদলের সরকারের সঙ্গে থাকা সমীচীন না। গণঅভ্যুত্থানে গঠিত সরকারের সঙ্গে এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে না।’
এ ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান তুলে ধরে সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল বলছে— রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণ যেটাই হোক, এতে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে। এটা আবার সব রাজনৈতিক দল বলছে না। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের অবস্থান হচ্ছে, আমরা রাজনৈতিক ঐক্য গড়ার চেষ্টা করব। রাষ্ট্রপতিকে রাখা বা না রাখার পক্ষে-বিপক্ষে যে মতামত উঠেছে, ঐকমত্যের ভিত্তিতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, মানুষ আবেগের জায়গা থেকে বলতেই পারে যে ওনার (রাষ্ট্রপতির) কাছে শপথ নিয়েন না। কিন্তু সাংবিধানিক দিক থেকে সেটিই (রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ) একমাত্র অপশন ছিলো। অন্তবর্তীকালীন সরকার কীভাবে গঠন হয়েছিল সেটা আপনারা জানেন। ৫ আগষ্ট থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত কার্যত কোনো সরকার ছিল না। আমরা তো সরকারে এসে একসঙ্গে বসার-আলোচনার সুযোগ পাইনি যে কার কাছে শপথ নেব।
বিএনপি বলেছে রাষ্ট্রপতি অপসারণ হলে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হতে পারে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রিজওয়ানা বলেন, বিএনপির কিছু নেতা কিন্তু বলছেন যে তারা সেই সংকট দেখছেন না। মূলত এই দুপক্ষের মতের মধ্যেই ঐক্য করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, খবরের কাগজে দেখেছি যে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা বলছে। সুতরাং আলোচনা যে শুধু বিএনপির সঙ্গেই হচ্ছে, বিষয়টা তা না। আমরা অপেক্ষা করছি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের।
৫৩ বছরেও জাতির কতগুলো সাধারণ স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমরা ঐকমত্যে আসতে পারিনি বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা। বলেন, আগের সরকারপ্রধান পদত্যাগ করেই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি কোনো রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে যাননি। একটি নতুন সরকার গঠিত হয়েছে আজ প্রায় তিন মাস হতে চলল। কাজ করছে। সেখানে পদত্যাগপত্রের প্রশ্ন তোলাই অবান্তরভাবে তোলা হয়েছে। রাষ্ট্রপতিও বলেছেন, একটি মীমাংসিত বিষয়কে ইস্যু বানানোর দরকার নেই। আসলে মীমাংসিত বিষয়টি উনিই হয়তো তুলেছেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়নি। জনদাবি অনেকেই করতে পারেন। অনেক কর্নার থেকে অনেক দাবি উঠতে পারে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি।
সারাবাংলা/জেআর/এমপি