Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেরোবির ২ শিক্ষক, ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ৭২ শিক্ষার্থী বরখাস্ত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৭:১৫

ফাইল ছবি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

রংপুর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনরতদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক ও সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৭২ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে ৫ আগস্টের পর ছুটি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সাঈদ হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ১০৮তম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী এসব কথা জানান।

উপাচার্য বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডসহ ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে হামলার দায়ে গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদ মন্ডল, সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ ৭২ শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততা পেয়েছি। সেজন্য আমরা দুই শিক্ষক ও সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্ত করছি। আর বিশেষ করে যে ৭২ শিক্ষার্থীর নাম এসেছে তাদের মধ্যে অনেকেই হয়তোবা সার্টিফিকেট নিয়ে চলে গিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে আমরা শৃঙ্খলা কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেব।’

তিনি বলেন, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করার পর ‘যারা ছুটি ছাড়াই অনুপস্থিত আছেন’— তাদের যোগদানের জন্য নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু কেউ নোটিশের উত্তর দেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটি ছাড়াই অনুপস্থিত থাকায় ২০১৮ সালের আচরণবিধি অনুযায়ী শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।’

সাঈদ হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে উল্লেখ করে উপাচার্য শওকত আলী বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় তার ভাই মামলা করেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা করেনি। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরাসরি আদালতে মামলা করবে। পুলিশ প্রধানের সঙ্গে কথা হয়েছে। মামলাটি সরাসরি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সঙ্গে যোগ হবে।’

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী।

উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের তদন্ত এখনো চলছে। কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রশাসনিক এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। আমাদের শৃঙ্খলা কমিটি আছে। আচরণ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

এর আগে, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবধরনের দলীয় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানান উপাচার্য। উপাচার্য বলেন, “বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন, ২০০৯ এর চাকুরীর শর্তাবলী ৪৭ এর ৪ ধারায় উল্লেখ আছে ‘কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হইতে পারিবেন না।” তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো আবাসিক সিট দখল, টেন্ডারবাজি চাঁদাবাজি চলবে না। এগুলো সব বন্ধ।”

তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়েছিলেন। এখন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি করা অবস্থায় কেউ যদি রাজনৈতিক দল করেন বা দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সারাবাংলা/পিটিএম

কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক শিক্ষার্থী বরখাস্ত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর