নিজের চিকিৎসার জন্য ২০০০ বই বিক্রি করতে চান তারেকুল কাদের
৩০ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:২০
ঢাকা: মির্জা তারেকুল কাদের। সাংবাদিক, জনসংযোগবিদ, লেখক ও গবেষক। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব জার্নালিজম অ্যান্ড ইলেকট্রনিক মিডিয়ার (বিজেম) প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক নির্বাহী পরিচালক। দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তিনি বোনম্যারো ক্যানসারে ভুগছেন। ব্যয়বহুল চিকিৎসার ব্যয় সংকুলানে অবশেষে তার সংগ্রহে থাকা ২০০০ বই বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তারেকুল কাদের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ, সাংবাদিকতা ইনস্টিটিউট ও এনজিওগুলোকে এসব বই কেনার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। এমনকি কোনো বিত্তশালী ব্যক্তিও তার সংগৃহীত বইগুলো কিনে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দান করে দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া, কোন আগ্রহীকে সাংবাদিকতাবিষয়ক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো কিনে একক কোনো লাইব্রেরির সংগ্রহশালাতে রাখারও আহ্বান জানিয়েছেন।
দীর্ঘ পাঁচ বছরে তারেকুল কাদের কেমোথেরাপি দিয়েছেন কয়েকবার। ব্লাড নিতে হয়েছে প্রায় ৬০ব্যাগ। এর আগে তিনি সিএমএইচ, পিজি, এভারকেয়ার হাসপাতাল, ডেল্টা ক্যানসার হসপিটাল, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল, গ্রিন লাইফ হাসপাতাল, আসগর আলী হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে ল্যাব এইড হাসপাতালে প্রখ্যাত হেমাটোলজিস্ট ও অনকোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মহিউদ্দিন আহমেদ খানের কাছে চিকিৎসাধীন। ক্যানসারের ব্যয়বহুল চিকিৎসার ভার বহন করতে না পেরে অবশেষে তিনি তার সাংবাদিকতা সংশ্লিষ্ট ২০০০ বই বিক্রি করে দেওয়ার কথা ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে জানান।
এর পর সারাবাংলার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় মির্জা তারেকুল কাদেরের। তিনি জানান, বোনম্যারো ক্যানসারের সর্বশেষ চিকিৎসা হলো ‘বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট’। ভারতে এই ট্রান্সপ্লান্ট করাতে হলে প্রয়োজন দেড় কোটি টাকা। যা তার পক্ষে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। তাই আপাতত তিনি নিজের সংগ্রহে থাকা ২০০০ বই বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সম্মান প্রথম ব্যাচের (১৯৭৭-১৯৮১) কৃতি শিক্ষার্থী মির্জা তারেকুল কাদের ১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।পরে তিনি ‘বিজেম’ প্রতিষ্ঠা করেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রথম নির্বাচিত সভাপতি এবং বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতির সাবেক সভাপতি মির্জা তারেকুল কাদের জনসংযোগ ও চলচ্চিত্রবিষয়ক গবেষণা গ্রন্থেরও প্রণেতা।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম