মেক্সিকোতে আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাচীন মায়া শহর
৩০ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:৪২
মেক্সিকোর ক্যাম্পেচ রাজ্যে ঘন জঙ্গলে একটি বিশাল প্রাচীন মায়া শহর শতাব্দী পর আবিষ্কৃত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি শিক্ষার্থী লুক অউল্ড থমাসের অপ্রত্যাশিত আবিষ্কার এই শহর।
লেজার প্রযুক্তি ‘লাইডার’ ব্যবহার করে এই শহরটি আবিষ্কৃত হয়েছে। এই প্রযুক্তি জঙ্গল ও গাছপালার আড়ালে লুকানো কাঠামো চিহ্নিত করতে সক্ষম। গবেষকরা শহরটির নাম রেখেছেন ‘ভ্যালেরিয়ানা’ একটি নিকটবর্তী হ্রদের নামে।
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ক্যাম্পেচ রাজ্যে প্রত্নতাত্ত্বিকরা পিরামিড, খেলার মাঠ, বিভিন্ন অঞ্চলকে সংযোগকারী রাস্তা এবং থিয়েটার খুঁজে পেয়েছেন। গবেষকরা মনে করছেন, এটি প্রাচীন লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম মায়া শহর কালাকমুলের পরেই দ্বিতীয় বৃহৎ শহর।
যুক্তরাষ্ট্রের তুলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি শিক্ষার্থী লুক অউল্ড-থমাস গুগলে অনুসন্ধান করার সময় মেক্সিকোর একটি সংস্থার পরিবেশগত নজরদারির জন্য করা একটি লাইডার জরিপের ডেটা খুঁজে পান। ডেটাটি বিশ্লেষণ করার সময় তিনি একটি প্রাচীন শহরের উপস্থিতি দেখতে পান, যা মায়া সভ্যতার সমৃদ্ধ ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ।
গবেষণার তথ্যমতে, শহরটিতে মায়া সভ্যতার স্থাপত্যশৈলীর নিদর্শন পাওয়া গেছে। শহরটির পরিসর ছিল প্রায় ১৬.৬ বর্গকিলোমিটার এবং এতে দুইটি প্রধান কেন্দ্র ছিল যা একে অপর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেখানে মন্দির, পিরামিড, খেলাধুলার জন্য কোর্ট এবং প্রাচীন সম্পদের সম্ভার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শহরটিতে ৩০-৫০ হাজার মানুষের বসবাস ছিল।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, শহরটি খ্রিস্টীয় ৭৫০ থেকে ৮৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সবচেয়ে জনবহুল ছিল। তবে পরবর্তী সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ এবং স্প্যানিশ বিজেতাদের আগমনের কারণে শহরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এই আবিষ্কারটি প্রমাণ করছে, প্রাচীন লাতিন আমেরিকায় গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলেও উন্নত ও জটিল সংস্কৃতির বিকাশ হয়েছিল।
উল্লেখ্য, মি. অউল্ড থমাস এবং তার দল প্রাচীন মায়া সভ্যতার আরো গোপন শহরের সন্ধানে রয়েছেন। তারা মনে করছেন, এখনও আরও বহু শহর জঙ্গলের আড়ালে চাপা পড়ে রয়েছে।
সারাবাংলা/এনজে