সিইসি ও ইসি পদের জন্য যে যোগ্যতাসম্পন্নদের খুঁজবে সার্চ কমিটি
৩১ অক্টোবর ২০২৪ ১৮:৫৪
ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ও চার নির্বাচন কমিশনার (ইসি) পদে যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইন বলছে, ১৫ কার্যদিবসের মধ্যেই এই কমিটিকে রাষ্ট্রপতির কাছে সিইসি ও ইসি পদে যোগ্যদের নাম প্রস্তাব করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সার্চ কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী এই কমিটির সভাপতি। সদস্যরা হলেন— হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নুরুক ইসলাম, পিএসসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) ও পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম।
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন ২০২২’ অনুযায়ী সার্চ কমিটি সিইসি ও চার ইসি তথা নির্বাচন কমিশনের পাঁচজনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের খুঁজে বের করবে। এ ক্ষেত্রে এসব পদের জন্য যোগ্যতা ও অযোগ্যতা হিসেবে কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করা হবে, সেটিও এই আইনেই উল্লেখ করা আছে।
সিইসি ও অন্যান্য ইসির যোগ্যতা
সার্চ কমিটি সিইসি ও ইসি পদের জন্য যাদের নাম সুপারিশ করবে রাষ্ট্রপতির কাছে, তাদের জন্য আইনে সুনির্দিষ্টভাবে তিনটি যোগ্যতার কথা উল্লেখ রয়েছে। আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী যোগ্যতাগুলো হলো—
- তাদের বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে;
- তাদের বয়স ন্যূনতম ৫০ বছর হতে হবে; এবং
- সুপারিশ করা ব্যক্তিতেদর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধাসরকারি, বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত পদে বা পেশায় ন্যূনতম ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
অর্থাৎ ৫০ বছরের বেশি বয়সী যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিকের যদি সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধাসরকারি, বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকে, তাহলেই তার নাম সুপারিশের যোগ্য হবে সিইসি ও ইসি পদের জন্য।
সিইসি ও অন্যান্য ইসির অযোগ্যতা
সিইসি বা ইসি পদে যোগ্যতার পাশাপাশি আইনের ৬ ধারায় বেশকিছু অযোগ্যতাও উল্লেখ রয়েছে। এগুলোর কোনো একটি প্রযোজ্য হলেও ওই ব্যক্তিকে আর নির্বাচন কমিশনের কোনো পদের জন্য সুপারিশ করা যাবে না। আইন অনুযায়ী অযোগ্যতাগুলো হলো—
- উপযুক্ত কোনো আদালত থেকে অপ্রকৃতিস্থ ঘোষণা;
- দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পাওয়া;
- কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার;
- নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাদণ্ডে দণ্ডিত;
- আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩ কিংবা বাংলাদেশ দালাল (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) অধ্যাদেশ ১৯৭২-এর অধীনে যেকোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত; এবং
- আইন দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না, এমন পদ ছাড়া প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোনো লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত।
এসব যোগ্যতা ও অযোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে সার্চ কমিটি সিইসি ও অন্যান্য ইসি পদে নিয়োগের জন্য প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে দুজনের করে নাম সুপারিশ করবে। সে হিসাবে সিইসি ও চার ইসির জন্য সার্চ কমিটিকে মোট ১০টি নাম প্রস্তাব করতে হবে। সেখান থেকেই রাষ্ট্রপতি সিইসি ও চার ইসি বেছে নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে দেবেন।
আরও পড়ুন-
- ইসি গঠনের জন্য যেভাবে কাজ করবে সার্চ কমিটি
- ‘নির্বাচনমুখী’ যাত্রায় সরকার, কারা থাকছেন সার্চ কমিটিতে
- বিচারপতি জুবায়েরের নেতৃত্বে সার্চ কমিটির প্রজ্ঞাপন জারি
সারাবাংলা/টিআর
ইসি ইসি গঠন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন কমিশন গঠন নির্বাচন কমিশনার প্রধান নির্বাচন কমিশনার সার্চ কমিটি সিইসি