সবজিতে স্বস্তি ফিরছে, উত্তাপ ছড়াচ্ছে পেঁয়াজ-আলু
১ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:১০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে সবজির দাম গত সপ্তাহের চেয়ে আরও কিছুটা কমেছে। তবে উত্তাপ ছড়াচ্ছে চাল, আটা, আলু ও পেঁয়াজ। এসব পণ্য কেজিতে গত সপ্তাহের চেয়ে অন্তত ৫ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। ডিম ও মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত আছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) নগরীর আসকার দিঘীর পাড় কাঁচাবাজারে দেখা গেছে, সবজির মধ্যে শীতকালীনগুলোর দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা করে কমেছে। কিছু সবজি অবশ্য এখনও ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে আছে। বেড়েছে টমেটোর দাম।
বাজারে খুচরায় শীতকালীন সবজির মধ্যে ফুলকপি ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা, বাঁধাকপি ও মূলা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, শিম ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। টমেটোর দাম মানভেদে ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে আছে। কাঁচামরিচ ১৮০ টাকা ও ধনিয়াপাতা ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া লাল শাক, মূলা শাক, পুঁই শাক ও মিষ্টি কুমড়া শাক ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
অন্যান্য সবজির মধ্যে লাউ, মিষ্টিকুমড়া, ঝিঙা, পটল, বরবটি, করলা চিচিঙ্গা, ধুন্দল, কচুরমুখী, বেগুন বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কাঁকরোলের দাম কেজিপ্রতি ১০০ টাকা আছে।
বিক্রেতা মো. সোহেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, ধনিয়াপাতা- এগুলোর দাম ৫-১০ টাকা কমেছে। অন্যান্য সবজি আগের মতোই আছে। টমেটোর দাম ২০-৩০ টাকা বেড়েছে।’
ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতো খুচরা বাজারে ডজনপ্রতি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সরকারি দর অনুযায়ী খুচরায় এক ডজন ডিমের দাম ১৪২ টাকা হওয়ার কথা।
ডিম-সবজিতে মোটামুটি স্বস্তি ফিরতে শুরু করলেও উত্তাপ ছড়াচ্ছে মুদি দোকানের নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য। এর মধ্যে পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে খুচরায় কেজিতে অন্তত ১৫ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ভারতীয় পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম ছিল মানভেদে ৯০ থেকে ১০৫ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেটা ১২০ টাকায় গড়িয়েছে।
নগরীর খাতুনগঞ্জের হামিদউল্লাহ মার্কেটের পেঁয়াজের আড়তদার মোহাম্মদ ইদ্রিস সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্ষার মৌসুম শেষে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে গেছে। ভারত থেকে অবশ্য পেঁয়াজের সরবরাহ এখনও স্বাভাবিক আছে। কিন্তু চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পাইকারিতে দাম কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়েছে।’
বিভিন্ন ধরনের চালের দামও বেড়েছে কেজিতে অন্তত দুই টাকা। নগরীর আসকার দিঘীর পাড়ে রাজীব স্টোরে বৃহস্পতিবার কাটারিভোগ আতপ ২৫ কেজির বস্তা ২ হাজার ৫০ টাকা, বেতি আতপ ৩২০০ থেকে ৩২৫০ টাকা, হাফসিদ্ধ নাজিরশাইল ২২০০ টাকা, চিনিগুড়া ১৫০ টাকা, পাইজাম আতপ ১৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
দোকানি রিপু নাথ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের আতপ চালের দাম বস্তায় অন্তত ৫০ টাকা বেড়েছে। সিদ্ধ চালের দাম আগে থেকেই কিছুটা বাড়তি আছে। তবে গত এক সপ্তাহে সেটা তেমন বাড়েনি।’
বাজারে এখন মিলছে শুধু চীনা আদা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেটার দাম কেজিতে অন্তত ৬০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে চীনা আদা ২৪০ টাকা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে দাম ৩০০ টাকা। আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া, ছোট মসুরের ডাল ১৩০ টাকা, মোটা মসুরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৫৫ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, চনার ডাল ১৪৫ টাকা, ছোলা ১৩৫ টাকা, দেশি রসুন ২৪০ টাকা, চীনা রসুন ২১০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
প্রতি লিটার বোতলের সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৫৩ টাকা, প্যাকেট চিনি ১৩৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ছয় টাকা বেড়ে ১২১ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
মাছ-মাংসের দাম গত সপ্তাহের মতোই দেখা গেছে। বাজারে মাঝারি সাইজের তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে। আর ২৫০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই, কাতলা, মৃগেল, কার্পিও, কালবাউস কার্পজাতীয় মাছ বিক্রি হয়েছে ২২০ থেকে ২৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আড়াই থেকে দুই কেজি ওজনের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছ ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া, ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী, ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৯০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৪০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, কাজলী মাছ ১ হাজার ২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, লইট্যা মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
মাংসের মধ্যে ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ১৯৫ টাকা, সোনালী মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৪০ টাকা, গরুর মাংস হাড়ছাড়া ৯৫০ টাকা এবং হাড়সহ ৭৫০ টাকা, খাসির মাংস ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ছবি: শ্যামল নন্দী, স্টাফ ফটোকরেসপন্ডেন্ট
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম